আরজি কর-কাণ্ডের ধৃতকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময়ে গাড়ি চাপড়াচ্ছে পুলিশ। সোমবার শিয়ালদহে। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হয় সোমবার। তাঁর গলার স্বর চাপা দিতে আদালত চত্বরে গাড়ির ছাদ চাপড়াতে দেখা গেল পুলিশকর্মীদের। সঙ্গে বাজানো হল প্রিজ়ন ভ্যানের হর্ন। যার ফলে ধৃতের কোনও কথাই আর শোনা যায়নি। শিয়ালদহ আদালতে পুলিশের এই আচরণ মনে করিয়ে দিচ্ছে ১১ বছর আগের কুণাল ঘোষের পর্বকে। সারদা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর কুণালও পুলিশের গাড়ি থেকে সরকার-বিরোধী নানা মন্তব্য করতেন। তাঁর স্বর চাপা দিতে তখনও পুলিশকে গাড়ি চাপড়াতে দেখা গিয়েছিল।
আরজি কর মামলায় ধৃত সিভিককেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে সিবিআইয়ের চার্জশিটে। তাঁর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১১ নভেম্বর থেকে প্রতি দিন আদালতে এই মামলার শুনানি হচ্ছে। এর মধ্যে একাধিক বার ধৃতকে পুলিশের প্রিজ়ন ভ্যান কিংবা অন্য গাড়ির ভিতর থেকে সংবাদমাধ্যমের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করতে শোনা গিয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই তিনি দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। এমনকি, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নামও করেছেন তিনি। শনিবার এবং রবিবার আদালত বন্ধ থাকায় এই মামলার শুনানি হয়নি। সোমবার তাঁকে আদালতে হাজির করানোর সময়ে পুলিশকে গাড়ি চাপড়াতে দেখা গেল।
সোমবার দুপুরে ধৃত সিভিককে নিয়ে পুলিশের গাড়ি পৌঁছয় শিয়ালদহ আদালতে। তাঁকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। গাড়ি থেকে নামানোর সময়ে তাঁকে ঘিরে ফেলে পুলিশ এবং র্যাফ। তার পর গাড়ির ছাদে হাত দিয়ে চাপড়াতে থাকেন পুলিশকর্মীরা। প্রিজ়ন ভ্যানের হর্নও বাজানো হয়। ধৃত অন্যান্য দিনের মতোই চিৎকার করে কিছু বলার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তা ঢাকা পড়ে যায় গাড়ির হর্নের শব্দে।
২০১৩ সালে সারদা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন কুণাল। সে সময়ে পুলিশের গাড়ি থেকে অনেক কথা বলেছিলেন তিনি যা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পক্ষে অস্বস্তির বলে মত অনেকের। তাঁর স্বর চাপা দিতেও পুলিশ গাড়ি চাপড়েছিল। আরজি কর-কাণ্ড ১১ বছর আগের সেই ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিল।