গত শনিবার ভূমিপূজন হয় ব্রিগেড ময়দানে। — নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। অংশ নেবেন গীতাপাঠে। কিন্তু মোদীর সফরসূচি চূড়ান্ত না হওয়ায় বার বার বদলাতে হয়েছে ২৪ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠান সূচি। অবশেষে চূড়ান্ত সূচি এসেছে আয়োজকদের হাতে। তাতে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী রবিবার কলকাতায় আসবেন দুপুর ১টায়। ব্রিগেড ময়দানে পৌঁছবেন দুপুর ১টা ৩৫ মিনিট নাগাদ। প্রথম থেকেই ঠিক ছিল, সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে শেষ হবে দুপুর ২টোয়। কিন্তু চূড়ান্ত যে অনুষ্ঠান সূচি তৈরি হয়েছে তাতে গোটা অনুষ্ঠানটিই এক ঘণ্টা পিছিয়ে যাচ্ছে। যদিও আয়োজকেরা জানিয়েছেন, যে হেতু প্রধানমন্ত্রী আসবেন তাই এর পরেও কিছু বদল হতে পারে।
গত শনিবারই ব্রিগেড ময়দানে ভূমিপূজন করেন ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’-এর আয়োজকেরা। এর পরেই মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। যা ঠিক হয়েছে তাতে, মূল মঞ্চটি হচ্ছে ৩৫ ফুট উচ্চতার। যার দৈর্ঘ্য হবে ৯৬ ফুট এবং প্রস্থ ৪০ ফুটের। এই ‘পার্থসারথি মঞ্চ’-এ বসবেন ওই অনুষ্ঠানের দুই বক্তা প্রধানমন্ত্রী এবং দ্বারকামঠের বর্তমান শঙ্করাচার্য স্বামী সদানন্দ সরস্বতী। এ ছাড়াও থাকবেন বিভিন্ন মঠ ও আশ্রমের প্রধান সন্ন্যাসীরা।
প্রথমে ঠিক ছিল গীতার মোট ২৩৭টি শ্লোক সমবেত কণ্ঠে পাঠ করা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৭৮টি শ্লোক বাদ দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ পাঠ হবে ১৫৯টি শ্লোক। মোদী চেয়েছিলেন, তিনি পঞ্চদশ অধ্যায়ের পাঠে অংশ নেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে সূচি পাওয়া গিয়েছে তাতে, মোদী দ্বাদশ ও পঞ্চদশ অধ্যায় মিলিয়ে মোট ৪০টি শ্লোকপাঠে অংশ নেবেন। গীতাপাঠ শুরুর আগেই কাজি নজরুল ইসলামের ‘হে পার্থসারথি! বাজাও বাজাও পাঞ্চজন্য শঙ্খ...’ গানটি পরিবেশন যে হবে তা আগে থেকেই ঠিক ছিল। কিন্তু পরিবর্তিত সূচিতে গীতাপাঠের শেষে এই গানটি আবার গাওয়া হবে।
এর পিছনে রয়েছে সম্ভাব্য বিশ্বরেকর্ড গড়ার সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বেশ কয়েকটি বিশ্বরেকর্ড হতে পারে বলে আয়োজকেরা আগেই দাবি করেছিলেন। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা ওই দিন কলকাতায় হাজিরও থাকবেন। অনেক কিছু দাবি করা হলেও মূলত বিশ্বরেকর্ড হতে পারে তিনটি কারণে। একসঙ্গে এত মানুষের গীতাপাঠ, একসঙ্গে ৭০ হাজার মানুষের নজরুলগীতি পরিবেশন এবং ৬০ হাজার মানুষের একসঙ্গে শঙ্খ বাজানোর রেকর্ড।
এই তিনটি ঘটনার সময়েই মোদীকে উপস্থিত রাখতে চান আয়োজকেরা। সেই কারণে যে পরিবর্তিত অনুষ্ঠানসূচি, তাতে বেলা ১১টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধর্মীয় ক্রিয়া এবং শঙ্করাচার্যের বক্তৃতার পরে নজরুলগীতি পরিবেশিত হবে ১২টা ৪৫ মিনিটে। এর পরে গীতার প্রথম দু’টি অধ্যায় পাঠ হবে ১টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে। কারণ, সেই সময়েই মোদী মঞ্চে আসবেন। তাঁর উপস্থিতিতে গীতার আরও দু’টি অধ্যায় পাঠের পরে শঙ্খ বাজানোর রেকর্ড। তার পরে আবার নজরুলগীতি। আয়োজক সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বরেকর্ড তৈরি হলে কোনও একটি সংস্থা সঙ্গে সঙ্গেই ‘সার্টিফিকেট’ দিয়ে দেবে। সেটা যাতে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গ্রহণ করা যায় তার জন্যই এত রদবদল।
সব শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা। অনুষ্ঠান সূচি অনুযায়ী, দুপুর ২টো ২৫ মিনিট থেকে ২টো ৫০ মিনিট পর্যন্ত বক্তৃতা করবেন মোদী। ২৫ মিনিট বলার পরে মঞ্চ ছাড়বেন দুপুর ৩টের সময়। এমন সম্ভাবনাও রয়েছে যে, মোদী এর পরে এই কর্মসূচির আয়োজক সন্ন্যাসীদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করতে পারেন। সে জন্য ব্রিগেড ময়দানে মূল মঞ্চের পিছনেই একটি অস্থায়ী ভোজনালয় বানানো হচ্ছে।