RG Kar Medical College and Hospital Incident

‘রাত দখল’-এর রাতে আরজি করে ভাঙচুর: এক সঙ্গে ৮৮ জনকে জামিন দিল শিয়ালদহ আদালত

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে গত ১৪ অগস্টের রাতে রাজ্য জুড়ে পালন হয়েছিল ‘মেয়েদের রাতদখল’ কর্মসূচি। সেই রাতেই আরজি করের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালায় এক দল দুষ্কৃতী। গ্রেফতার হন অনেকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:১৩
আরজি করে ভাঙচুরের রাতের দৃশ্য।

আরজি করে ভাঙচুরের রাতের দৃশ্য। ছবি: পিটিআই।

এ বার ১৪ অগস্টের রাতে আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ৮৮ জনকে এক সঙ্গে অন্তর্বর্তী জামিন দিল শিয়ালদহ আদালত। সোমবার জামিন মঞ্জুর হল তাঁদের। আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত জামিন মিলেছে সকলেরই।

Advertisement

‘রাতদখল’-এর দিন আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনায় শ্যামপুকুর, উল্টোডাঙা এবং টালা থানায় তিনটি পৃথক মামলা রুজু হয়েছিল। পাশাপাশি অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্টও করে কলকাতা পুলিশ। তিন মামলায় একে একে বহু মানুষকে গ্রেফতার করে লালবাজার। পরে ধৃতদের চার জনের জামিনও হয়েছিল। এ বার তিন মামলায় এক সঙ্গে ৮৮ জনের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করল শিয়ালদহ আদালত।

অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী দেবাঙ্ক দাস বলেন, ‘‘ওঁরা কেউ কোনও বেআইনি কাজ করেননি। আমরা নিঃশর্ত জামিন চেয়েছিলাম। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি যে, কলকাতা শহরে এক জন নাগরিকের শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে। ওঁরাও সেই অধিকারবলেই আন্দোলন করছিলেন। আজ আদালত তাঁদের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে।’’

আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে গত ১৪ অগস্টের রাতে রাজ্য জুড়ে পালন হয়েছিল ‘মেয়েদের রাতদখল’ কর্মসূচি। জমায়েতে শামিল হয়েছিলেন দলে দলে মানুষ। সেই কর্মসূচি চলাকালীনই আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে এক দল দুষ্কৃতী হামলা চালায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর করা হয়। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় আরজি করের বাইরে চিকিৎসকদের প্রতিবাদমঞ্চ। ঘটনাস্থলে পুলিশকে কার্যত অসহায় দেখায়। পরে কলকাতা পুলিশের সদ্য-প্রাক্তন কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, এত সংখ্যক মানুষ ওই ভাবে জড়ো হবেন এবং আক্রমণ চালাতে পারেন হাসপাতালে, সেটা তাঁরা ভাবতেই পারেননি। নিজেদের ব্যর্থতার কথাও স্বীকার করে নেন তিনি। সেই রাতেই আরজি করে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ৩৭ জন। পরে গ্রেফতারির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডে সমাজমাধ্যমে ভুল বা অনৈতিক তথ্য প্রচারের জন্য একাধিক চিকিৎসককেও নোটিস পাঠিয়ে তলব করে পুলিশ।

এই ঘটনার দায় সরাসরি সিপিএম, বিজেপির মতো বিরোধী দলগুলির উপর চাপিয়ে দেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, হামলাকারীদের হাতে বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের পতাকা দেখা গিয়েছে। যাঁরা জাতীয় পতাকা নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের বিজেপি সমর্থক বলেও চিহ্নিত করেন মমতা। যদিও পুলিশ সেই দাবি নাকচ করে জানিয়ে দেয়, হাসপাতালের বাইরে ডিওয়াইএফআইয়ের পতাকা থাকলেও ভিতরে তার প্রমাণ মেলেনি। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কেও তলব করে লালবাজার। এ সব চাপানউতরের মাঝেই আবার অভিযোগ ওঠে, আরজি করে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আসল অপরাধীদের আড়াল করতে অনেক নিরীহ লোককে গ্রেফতার করছে পুলিশ। এ নিয়ে নিরপরাধ একাধিক ব্যক্তির পরিবারের তরফে মামলাও করা হয়। এর পরেই ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট। দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের নির্দেশে আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। বসানো হয় নজরদারি ক্যামেরাও।

আরও পড়ুন
Advertisement