নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
অনিকেত বলেন, ‘‘কমিটি তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার পর সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’
মমতা বলেন, ‘‘ আরজি করের প্রিন্সিপাল কেন ৪৭ জনকে সাসপেন্ড করলেন কেন? কী ভাবে নিজে সিদ্ধান্ত নিলেন? রাজ্য সরকারকে জানানোর প্রয়োজন মনে করলেন না? এটা থ্রেট কালচার নয়? তদন্ত না করে কাউকে সাসপেন্ড নয়। ইচ্ছে মতো কাজ করবেন না। কেউ কাউকে থ্রেট করবেন না। আমি ক্ষমতায় বলে থ্রেট করতে পারি না।’’
র্যাগিং নিয়ে মুখ খুললেন মমতা। তিনি জানালেন, এই নিয়ে মানসিকতা বদলাতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চাই না র্যাগিং হোক।’’
মমতা বলেন, ‘‘ছোটবেলায় যখন হাসপাতালে যেতাম, দেখতাম অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার জায়গা নেই। এখন চলাচল করতে পারে। আমরা কিছু করেছি। আরও করতে হবে। হাসপাতালে সন্তান প্রসবের হার এখন ৯৯ শতাংশ। অর্থাৎ ৯৯ শতাংশ মা হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন। আগে ছিল ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ। আমি চাই ১০০ শতাংশ হোক।’’
মমতার অভিযোগ, কেন্দ্রের থেকে টাকা মেলে না। তার পরেও রাজ্যের হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মমতা বলেন, ‘‘আগে ডাক্তারের সংখ্যা ছিল চার হাজার। আমরা এসে তা বৃদ্ধি করে ১৭ হাজার করেছি। ৩৫টি মেডিক্যাল কলেজ করেছি। পেডিয়াট্রিক বিভাগ প্রায় ৬০০। সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র হয়েছে। ওগুলো প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র। সেখানে সব চিকিৎসক দিলে হাসপাতাল চলবে কী করে?’’
মমতা বলেন, ‘‘অনেক অধ্যক্ষ, সুপার নিজেদের কাজ করেন না। তোমাদের সঙ্গে আমি একমত। তাঁরা রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করেন।’’
মমতা বলেন, ‘‘কাজটা তোমরাই করবে। তোমাদের মতামতকে স্বাগত জানাই।’’
পন্থ জানিয়েছেন, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগের চেষ্টা করছে রাজ্য।
২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষ করা হবে বলে জানালেন পন্থ।
মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। কমিটির কি সুযোগ-সুবিধা, দায়িত্ব রয়েছে, তা নিয়ে জানানো হবে। কোথায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা যায়, কোথায় যায় না, তা নিয়েও স্পষ্ট জানানো হবে। মমতা বলেন, ‘‘কেউ কেউ ইচ্ছা মতো কাউন্সিল তৈরি করছেন।’’
মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে অনেক কাজ এগিয়েছে। প্রত্যেক মেডিক্যাল কলেজে যাতে নিরাপদ পরিবেশ থাকে, তা আমাদেরও চেষ্টা। আমরা স্টেট লেভেল টাস্ক ফোর্স করেছি। গ্রিভ্যান্স রিড্রেসল সেল গঠন করা হয়েছে। ইমেল আইডি দিয়েছি, যেখানে অভিযোগ জানাতে পারবেন।’’
মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, ‘‘তোমরা চা খাবে তো?’’ এর পরেই নবান্নে উপস্থিত জুনিয়র ডাক্তারদের চা পরিবেশন করা হল।
আন্দোলনকারী এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘দোষ প্রমাণের আগে তাঁকে দোষী বলা যাবে না। তবে অভিযুক্ত বলা যেতে পারে।’’ মুখ্যমন্ত্রী এই দাবি মানেননি। তিনি জানিয়ে দেন, ‘অভিযুক্ত’ বলা যাবে না।
আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ রয়েছে। আপনি প্রমাণ চেয়েছেন। স্যরের হাত দিয়ে বেশ কিছু চিঠি বেরিয়েছে।’’ মমতা বলেন, ‘‘একটা মানুষ অভিযুক্ত কি না, প্রমাণ না পেলে তাঁকে অভিযুক্ত করা যায় না।’’
অনিকেত মেডিক্যাল কলেজে যৌন হেনস্থার অভিযোগের কথা জানালেন। বললেন, ‘‘আরজি করের মতো দ্বিতীয় ঘটনা যাতে না হয়, তা দেখা হোক। মেয়েদের নিরাপত্তার জায়গাটা দেখা হোক।’’ তাঁর দাবি, ‘থ্রেট কালচার’-এর পাশাপাশি যৌন হেনস্থাও চলে।
১৪ অগস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুড়ের অভিযোগে ধৃতদের জামিন দেওয়া হয়েছে। সেই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মতামত জানতে চাইলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটা নতুন দাবি’’। চিকিৎসকেরা জানান, এটা তাঁদের দাবি নয়। মতামত জানতে চাইছেন তাঁরা।
বৈঠকে দেবাশিসের মুখে উঠল ‘থ্রেট কালচার’-এর প্রসঙ্গ। এই প্রসঙ্গে বিরুপাক্ষ এবং অভীকের নাম নিতেই থামিয়ে দিলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘উপস্থিত নেই যখন, নাম নেবেন না। নাম নিলে তো তাঁকেও তাঁর কথা বলার জায়গা দিতে হয়। ’’
দেবাশিস বলেন, ‘‘নির্বাচন যত দিন না হচ্ছে, তত দিন অন্তর্বর্তী এক ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।’’
নবান্নের বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমও। জুনিয়র ডাক্তারেরা যে ১০ দফা দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ করছেন, তার মধ্যে অন্যতম হল নিগমের অপসারণ। সোমবারের বৈঠকে তিনি উপস্থিত। আন্দোলনকারীদের কি বার্তা দিতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী?