Kunal Ghosh

কুমোরপাড়ায় প্রতিমা পিছু টাকা চাইছে তৃণমূল! দলের ভোট বৈঠকে ‘মানিক-তোলা’ হুঁশিয়ারি শোনালেন কুণাল

এর আগে মানিকতলা বিধানসভা এলাকারই একটি আবাসনে ঢুকে স্থানীয় তৃণমূলের লোকজন ‘তাণ্ডব’ চালিয়েছিল। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুঃখপ্রকাশ করে আসতে হয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্বকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৪ ১৭:৪৩
Kunal Ghosh warned a group of party workers about the allegations of extortion

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

উত্তর কলকাতার ক্যানাল ইস্ট রোডের কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীদের কাছ থেকে প্রতিমা পিছু টাকা দাবি করছে স্থানীয় তৃণমূলের কিছু লোকজন। অভিযোগ আসতেই, যারা ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের উদ্দেশে দলীয় বৈঠকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। বৈঠকে ছিলেন মানিকতলা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডেও।

Advertisement

মানিকতলা বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়ে শনিবার একটি ঘরোয়া বৈঠকে বসেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই বৈঠকেই কুণাল বলেন, ‘‘দু’-একটা ছোটখাটো অভিযোগ রয়েছে। ওটা ভোলাদা (১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী) দেখে নেবে।’’ এর পরেই কুণাল বলেন, ‘‘ক্যানাল ইস্ট রোড, যেখানে ঠাকুর গড়া হয়, সেখান থেকে একটা অভিযোগ এসেছে। আমাদের সঙ্গে থাকা দু’এক জন তাঁদের কাছে কোনও আবদার-টাবদার করছে। কোনও অবস্থায় কারও মনে যেন এতটুকু ক্ষোভ না থাকে যে, কেউ এই উপনির্বাচনে ভোট দিতে গেলেন না বা রাগে ভোটটা অন্য জায়গায় দিয়ে দিলেন।’’ স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্দেশেও কুণাল অনুরোধ করেন, বিষয়টি তিনি যেন গিয়ে দেখে নেন।

তবে সেখানেই থামেননি কুণাল। যারা ওই ‘অন্যায় আবদার’ করেছে, তাদের উদ্দেশে কুণাল বলেন, ‘‘আমি জানি, তাদের কাছে খবর চলে যাবে! হয় তারা সিধে হবে, না হয় আইনি ব্যবস্থার মধ্যে পড়তে হবে। সোজা কথা বলে দিলাম!’’

স্থানীয় তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের ‘সঙ্গে থাকা’ কিছু লোকজন ক্ষমতা দেখিয়ে কুমোরপাড়ায় তোলাবাজি করছে। প্রতিমা পিছু টাকা দাবি করছে। এমনকি, ঠাকুরের উচ্চতা প্রতি পৃথক পৃথক ‘রেট’ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ কুণাল।

এর আগে মানিকতলা বিধানসভা এলাকারই একটি আবাসনে ঢুকে স্থানীয় তৃণমূলের লোকজন ‘তাণ্ডব’ চালিয়েছিল। কয়েকশো অটো, মোটরসাইকেল নিয়ে ওই আবাসনে ঢুকে পড়েছিল তারা। তারস্বরে বাজানো হয়েছিল ডিজে। এমনকি, যথেচ্ছ সোডার বোতল ছোড়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ। ভোটের ফলঘোষণার পর ওই ঘটনায় দলীয় বৈঠকে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মমতার নির্দেশেই কুণাল এবং স্থানীয় কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুন্ডু ওই আবাসনে গিয়ে আবাসিকদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে এসেছিলেন। ফের সেই মানিকতলাতেই তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছে।

মানিকতলা বিধানসভা উত্তর কলকাতা লোকসভার অধীনে। তৃণমূল লোকসভা আসনে জিতেছে। তবে মানিকতলায় তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এগিয়ে রয়েছেন মাত্র সাড়ে তিন হাজার ভোটে। সন্দেহ নেই, উপনির্বাচনে সেই ব্যবধান অনেকটাই বাড়াতে চাইবে তৃণমূল। তা ছাড়া, এই উপনির্বাচনে কুণালেরও নিজেকে ‘প্রমাণ’ করার তাগিদ রয়েছে। কারণ, তাঁকে ‘আহ্বায়ক’ করেই মানিকতলা বিধানসভা উপনির্বাচনে চার সদস্যের কমিটি গড়ে দিয়েছেন মমতা। যে কমিটিতে রয়েছেন ডেপুটি মেয়র তথা কাশীপুর-বেলগাছিয়ার বিধায়ক অতীন ঘোষ, বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পাল এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র পরিষদ সদস্য স্বপন সমাদ্দার। আগামী ১০ জুলাই ভোটগ্রহণ মানিকতলায়। তার আগে এ হেন অভিযোগ পেয়েই কড়া বার্তা দিয়ে রাখলেন কুণাল। যা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেও শোরগোল শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement