R G Kar Hospital Incident

আরজি করে আধ ঘণ্টার নৃশংসতা কী কী ভাবে ঘটল? ধর্ষণ, অত্যাচার এবং খুনের সূত্র জুড়ছেন তদন্তকারীরা

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ভোর ৪টে থেকে সাড়ে ৪টের মধ্যে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে মিলেছে এই তথ্য। ওই আধ ঘণ্টার মধ্যে ঠিক কী ঘটেছিল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

Advertisement
সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৪ ২১:৫৪
Kolkata Police is investigating what happened in half an hour on Friday morning at R G Kar hospital

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে কর্তব্যরত যুবতী চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উঠছে একের পর এক প্রশ্ন। প্রাথমিক তদন্তের পর বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঘটনাক্রমের এক রূপরেখা এঁকেছেন তদন্তকারীরা। তার পরেও বেশ কিছু বিষয় ভাবাচ্ছে তাঁদের। ঘুমন্ত অবস্থায় যুবতীর উপর হামলা, তার পর তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সেটা খানিক স্পষ্ট বলেই তদন্তকারীদের একাংশের মত। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টও সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। তদন্ত যত এগোচ্ছে, রহস্য ততই ঘনীভূত হচ্ছে। হামলা করার পর ওই যুবতী নিজেকে বাঁচানোর জন্য যতটা প্রতিরোধ করা স্বাভাবিক, তা করতে পারেননি বলেই তদন্তকারীদের সূত্রে খবর। কিন্তু কেন তিনি প্রতিরোধ করতে পারলেন না, সেই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। পাশাপাশি, আধ ঘণ্টায় ঠিক কী কী ঘটেছিল, সেই সূত্র জুড়েই রহস্যের কিনারা করতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

পুলিশ আগেই জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ভোর ৪টে থেকে সাড়ে ৪টের মধ্যে। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার সেই সময়কার ফুটেজ দেখেই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহও করা হয়েছে। সেই সব খতিয়ে দেখতে গিয়েই ঘটনা সম্পর্কে নানান প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, অভিযুক্ত যখন চিকিৎসকের উপর হামলা করেন, তখন তিনি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন। টানা ডিউটি করে অনেকটাই ক্লান্ত ছিলেন ওই যুবতী। সেই সময়েই অতর্কিতে হামলা চালায় অভিযুক্ত।

ওই সেমিনার হলে ঠিক কী ঘটেছিল, তার ছবি এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ইঙ্গিত মেলে, আক্রমণের সময় ওই মহিলার নিজেকে বাঁচাতে যতটা প্রতিরোধ করা স্বাভাবিক ততটা করতে পারেননি। তদন্তে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্ত খুবই বলশালী। ফলে তিনি যখন মহিলাকে আক্রমণ করেন, তখন তাঁকে খুব শক্ত ভাবে চেপে ধরা হয়। যুবতীর মুখ, গলা, হাত-পা, এমন ভাবে চেপে ধরেন অভিযুক্ত, যার ফলে তিনি স্বাভাবিক প্রতিরোধ করার সুযোগ পাননি। পাশাপাশি এ-ও প্রশ্ন উঠছে, হামলার সময় কি ওই যুবতী বাঁচার জন্য সাহায্য চাইতে চিৎকার করতে পারেননি? যদি চিৎকার করেন তবে তা হাসপাতালের অন্য কেউ কেন শুনতে পেলেন না?

এই সব প্রশ্ন নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে অভিযুক্তের গায়ের জোরের বিষয়টিও। অভিযুক্ত যুবক পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযুক্তের মায়ের কথায়, তাঁর ছেলে ছোট থেকেই শরীরচর্চা করতেন। এমনকি, বক্সিংও শিখেছেন। তার পরেই তদন্তকারীদের কাছে গায়ের জোরের যুক্তিটি আরও জোরালো হয়েছে। শ্বাসরোধ করেই আরজি করের ওই চিকিৎসক পড়ুয়াকে খুন করা হয়েছে, তা উঠে এসেছে তদন্তে। কিন্তু আধ ঘণ্টায় কী ভাবে অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে, সেই প্রশ্নই এখন তদন্তকারীদের আতশকাচের নীচে।

আরও পড়ুন
Advertisement