গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ফেসবুক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মৃত্যু হল কলকাতার চিকিৎসকের। তাইল্যান্ডের এক মহিলার সঙ্গে দেখা করতে সোমবার রাতে প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় একটি বহুতলে গিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। সেখানে মদ্যপান করেছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার সময় ওই চিকিৎসক দেখেন বহুতলের মূল দরজা তালাবন্ধ। তাই কেয়ারটেকারকে ফোন করেছিলেন ওই চিকিৎসক। কিন্তু কেয়ারটেকার সেই সময় ফোন ধরেননি বলে দাবি। তখন বহুতলের কার্নিশ বেয়ে নামতে যান তিনি, সেই সময়ই পাঁচ তলা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই চিকিৎসকের, মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে পুলিশ। ঝুঁকি নিয়ে কেনই বা তিনি কার্নিশ বেয়ে নামতে গেলেন, এই নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
ওই চিকিৎসকের নাম শুভঙ্কর চক্রবর্তী। তাঁর বাড়ি সল্টলেকে। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোররাত ৩টে ১৫ মিনিটে ওই চিকিৎসককে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি বহুতলের নীচ থেকে উদ্ধার করা হয়। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনায়। থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর ওই বান্ধবীকে। তার পরই তদন্তে নেমে সোমবার রাতের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুকে তাইল্যান্ডের এক মহিলার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল ওই চিকিৎসকের। সেই আলাপ বন্ধুত্বে গড়ায়। গত ২৩ মে নেপাল ঘুরে ভারতে আসেন চিকিৎসকের ওই বান্ধবী। তিনি তাইল্যান্ডের বাসিন্দা। তার পর থেকে প্রগতি ময়দান থানা এলাকার ওই বহুতলে ভাড়াটিয়া হিসাবে থাকছিলেন বান্ধবী। বহুতলে ছোট একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। সোমবার রাত ১০টা নাগাদ ওই বহুতলে বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন চিকিৎসক। সেখানে চিকিৎসক মদ্যপান করেন বলে দাবি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সেই সময় বাড়ি থেকে কয়েক বার ফোন পান চিকিৎসক। তার পরই বাড়ি ফিরবেন বলে মনস্থির করেন ওই চিকিৎসক। কিন্তু বহুতলের মূল দরজা তালাবন্ধ ছিল। তাই বেরোনোর জন্য কার্নিশ বেয়ে নামতে যান তিনি। সেই সময়ই পাঁচ তলা থেকে পড়ে যান চিকিৎসক। তার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এই ঘটনায় তাই কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। ওই বহুতলের কেয়ারটেকারের মা বলেন, ‘‘আমার মেয়ে-জামাই থাকে এখানে। মেয়ের কাছ থেকেই খবর পাই যে দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা কেয়ারটেকার হিসাবে থাকি। চিকিৎসক এবং তাঁর বান্ধবী— দু’জনেই থাকেন এখানে। বান্ধবী তাইল্যান্ডের।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই চিকিৎসকের বাড়ি সল্টলেকে। আমরা ওঁদের স্বামী-স্ত্রী হিসাবে জানতাম। মাঝেমাঝে আসতেন এখানে। আজ জানতে পারলাম যে, ওই চিকিৎসকের স্ত্রী, সন্তান সল্টলেকের বাড়িতে থাকেন।’’