Bansdroni Student Death

পে লোডারের চালককে পালাতে সাহায্য করেন মালিক! দু’জনই গ্রেফতার: বাঁশদ্রোণীকাণ্ডে ডিসি

বাঁশদ্রোণীতে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক পে লোডারের চালক এবং মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ১২:২২
(বাঁ দিকে) বাঁশদ্রোণীতে ঘাতক পে লোডার। কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) বাঁশদ্রোণীতে ঘাতক পে লোডার। কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বাঁশদ্রোণীতে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন ঘাতক পে লোডারের চালক এবং মালিক। সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত। দু’জনকেই বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পে লোডারের মালিকই চালককে পালাতে সাহায্য করেছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে বিদিশা বলেন, ‘‘পে লোডারে চাপা পড়ে কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় বাঁশদ্রোণী থানায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। কলকাতা পুলিশের একটি বিশেষ দল ওই পে লোডারের চালকের খোঁজ শুরু করেছিল। বৃহস্পতিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দমদম এবং চিৎপুরের সীমানা থেকে দু’জনকে আটক করা হয়। দীর্ঘ ক্ষণ তাঁদের জেরা করা হয়। জানা যায়, তাঁদের মধ্যে এক জন শম্ভু রাম। পে লোডার চালাচ্ছিলেন তিনিই। ওই পে লোডারের মালিক বিশ্বকর্মা শর্মাই ঘটনার পর চালককে পালাতে সাহায্য করেছিলেন। চালককে লুকিয়ে রাখার ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা ছিল। তাই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।’’

ছাত্রমৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাঁশদ্রোণীতে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে আটকে রেখে দীর্ঘ ক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। পুলিশকে নিগ্রহের সেই ঘটনাতেও একাধিক মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ডিসি বলেন, ‘‘ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছিল। বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিল। পাটুলি থানার ওসিও গিয়েছিলেন পরিস্থিতি সামাল দিতে। কিন্তু পুলিশকে নিগ্রহ করা হয়। সেই ঘটনাতেও আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ভিডিয়ো ফুটেজ আমরা খতিয়ে দেখছি। পুলিশকে হেনস্থার সময় যাঁদের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের অগ্রাধিকার ছিল চালককে গ্রেফতার। সেটা হয়ে গিয়েছে। এ বার বাকি ঘটনার তদন্ত হবে। ছাত্রমৃত্যু এবং পুলিশকে হেনস্থা মিলিয়ে বাঁশদ্রোণীকাণ্ডে মোট পাঁচটি মামলা হয়েছে। তার মধ্যে পুলিশ নিগ্রহ নিয়ে দু’টি মামলা রয়েছে। সব অভিযোগের তদন্ত হবে।’’

বাঁশদ্রোণীর ঘটনার পর রাতে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। রাতভর ধর্নার পর সকালে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আদালত থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন তিনি। সে প্রসঙ্গে ডিসি বলেন, ‘‘সে দিন রাতে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় থানায় এসেছিলেন। আমরা ওঁর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ওঁর দাবি ছিল, ধৃত মহিলাকে ছেড়ে দিতে হবে। ওঁকে বোঝানো হয়, ওই মহিলার বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হওয়ায় তাঁকে ছাড়া যাবে না। আদালতে হাজির করাতে হবে। কিন্তু উনি তার পরেও ধর্নায় বসেন। সকালে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।’’

উল্লেখ্য, বুধবার মহালয়ার সকালে বাঁশদ্রোণীতে পে লোডারের ধাক্কায় গাছের সঙ্গে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় নবম শ্রেণির এক ছাত্রের। কোচিং সেন্টারে যাওয়ার মুখে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল সে। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদারের সঙ্গে দেখা করার দাবিতে বুধবার দিনভর সেই বিক্ষোভ চলে। কিন্তু কাউন্সিলর এলাকায় যাননি। পুলিশকে আটকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পাটুলি থানার ওসিকে কাদাজলে দাঁড় করিয়ে রাখাও হয়েছিল। পরে সন্ধ্যার দিকে ডিসি গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement