কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মৃত্যুতে র্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। তার বিরুদ্ধে এ বার মামলা হল কলকাতা হাই কোর্টে। সোমবার যাদবপুরকাণ্ডের সূত্র ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে র্যাগিংয়ের বিষয়ে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে আদালত। চলতি সপ্তাহেই মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে র্যাগিং, জুনিয়র ছাত্রছাত্রীদের উপর অত্যাচার ঠেকাতে প্রাক্তন সিবিআই ডিরেক্টর আর কে রাঘবনের নামে একটি র্যাগিং-বিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছিল। র্যাগিং ঠেকাতে সেই কমিটি একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছিল। অভিযোগ, ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ট কমিশন (ইউজিসি)-এর অনুমোদিত কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই সেই নির্দেশিকা সঠিক ভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। মানা হচ্ছে না কোনও নিয়ম। সেই কারণেই শুধু যাদবপুর নয়, রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনের পর দিন র্যাগিং হয়ে চলেছে। যার মর্মান্তিক পরিণতিতে প্রাণ গিয়েছে যাদবপুরের ছাত্রেরও।
র্যাগিং-বিরোধী কমিটির নির্দেশিকার বাস্তবায়ন চেয়ে সোমবার মামলা দায়ের করা হয়েছে হাই কোর্টে। মামলাকারীর আবেদন, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে ইউজিসি ওই কমিটির নির্দেশিকা মেনে চলার ব্যবস্থা করে, তা নিশ্চিত করা হোক। তবেই কলেজে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের দাপট কমবে। প্রসঙ্গত, যাদবপুরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ট কমিশন (ইউজিসি)-এর প্রতিনিধি দল আসবে আগামী বুধবার। ইতিমধ্যেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। ওই ছাত্র বুধবার রাতে মেন হস্টেলের এ২ ব্লকের তিন তলার বারান্দা থেকে নীচে পড়ে যান। বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই পরের দিন ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত হস্টেলের তিন জন আবাসিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং এক জন প্রাক্তনী। তাঁদের আগামী ২২ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
(পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী রবিবার তাঁর একটি ফেসবুক পোস্টে যাদবপুরের মৃত ছাত্রের নাম না-লিখতে অনুরোধ করেছেন। এই মৃত্যুমামলা অপ্রাপ্তবয়স্কদের উপর যৌন নির্যাতন বিরোধী ‘পকসো’ আইনে হওয়া উচিত বলেও তাঁর অভিমত। কমিশনের উপদেষ্টার অনুরোধ মেনে এর পর আনন্দবাজার অনলাইন মৃত ছাত্রের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে।)