ইডির দাবি, তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে অনুব্রতের বিরুদ্ধে। ছুটির দিনে আদালতের সময় নষ্ট করার অভিযোগ করে তারা। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারবে ইডি। শনিবার রায় দিল কলকাতা হাই কোর্ট। শুধু তাই নয়। বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর এজলাসে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা হল বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির। কারণ, আদালতের পর্যবেক্ষণ, দিল্লি এবং কলকাতা, দুই হাই কোর্টের দুই রাজ্যের শীর্ষ আদালতকে তথ্য লুকিয়ে হয়রানি করেছেন তিনি।
শনিবার ওই মামলার শুনানিতে অনুব্রতের আইনজীবী জানিয়েছিলেন তাঁর মক্কেল অসুস্থ। যার প্রেক্ষিতে ইডির আইনজীবী জানান, প্রয়োজনে দিল্লির এমসে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হবে অনুব্রতের। সব পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর আদালতের নির্দেশ, অনুব্রতের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রেখে তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যেতে পারে ইডি। পাশাপাশি আকাশপথে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে হবে। তার আগে রাজ্যের কোনও কেন্দ্রীয় হাসপাতালে কেষ্টর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে হবে।
প্রসঙ্গত, দিল্লি যাওয়া আটকাতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার তৃণমূল নেতা অনুব্রত। শনিবার আদালতে শুনানি চলাকালীন তৃণমূল নেতার আইনজীবী জানান, শারীরিক ভাবে অনুব্রত অসুস্থ। যার প্রেক্ষিতে ইডি জানায় প্রয়োজনে দিল্লি এমসে চিকিৎসার বন্দোবস্ত হবে অনুব্রতের। বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর এজলাসে অনুব্রতের আইনজীবী জানান, দিল্লি হাই কোর্টে ইডি মৌখিক ভাবে আশ্বাস দিয়েছিল ওই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাজিরা করানো হবে।
এর আগে মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর পর্যবেক্ষণ, এটা গুরুত্বপূর্ণ মামলা। আর নির্দেশনামাতেও কিছু নেই। ৪ মাস ধরে ইডির মৌখিক আশ্বাসের পর আলাদা করে নির্দেশনামায় বিষয়টি উল্লেখ করা প্রয়োজন হল কেন? বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘এখানে বার বার দেখেছি মৌখিক আশ্বাস নির্দেশনামায় উল্লেখ করতে বলেন। তবে দিল্লি হাই কোর্টে এটা করলেন না কেন? যেখানে আপনাদের অভিযোগ হচ্ছে ইডি আপনাদের মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছেন।’’ পাল্টা অনুব্রতের আইনজীবী জানান, গত ২১ ডিসেম্বর ২০২২ জেল কর্তৃপক্ষকে ইমেল করে ইডি। জানানো হয় এখনই কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। তা ছাড়া অনুব্রতের শারীরিক সমস্যা রয়েছে। আসানসোলের সিবিআই আদালত পর্যাপ্ত চিকিৎসার কথা জানিয়েছেন।
তাই যে কোনও বিশেষজ্ঞকে দিয়ে তাঁর চিকিৎসা করানো হোক। সেখান থেকে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত স্থগিত রাখা হোক হাজিরার নির্দেশ। ১৭ ডিসেম্বর দিল্লি হাই কোর্টে শুনানি রয়েছে। ওই দিন পর্যন্ত রক্ষাকবচ দেওয়া হোক।
অন্য দিকে, অনুব্রতকে নিশানা করেন ইডির আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘এক অন্য হাই কোর্ট থেকে অন্য হাই কোর্টে আবেদন করছেন অনুব্রত। তথ্য গোপন করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ছুটির দিনে আদালতের সময় নষ্ট করা হয়েছে। একজন আইনজীবী হিসেবে বলব, বড় জরিমানা করা উচিত (অনুব্রতের)।’’ প্রশ্ন করেন, ‘‘পছন্দের রায় না পেতেই কি বার বার আদালত পরিবর্তন? এমনকি, শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে জানানো হয়েছে এখান থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। অথচ শুনানি হচ্ছে। অনুব্রত একজন নীতিহীন বিচারপ্রার্থী।’’