Anubrata Mondal

‘নীতিহীন বিচারপ্রার্থী’ কেষ্টর জরিমানা চাইল ইডি, দিল্লি নিয়ে গিয়ে এমসে চিকিৎসা করানোর সওয়াল

অনুব্রত-মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে ইডির আইনজীবী জানান, আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে তাঁরা খবর পেয়েছেন যে, অনুব্রতকে জেলেই ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৩ ১২:৪৬
ED in Calcutta High Court says Anubrata Mondal can be admitted to Delhi AIMS

দিল্লি যাওয়া আটকাতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার তৃণমূল নেতা অনুব্রত। ফাইল চিত্র।

জেলা হাসপাতাল থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে সংশোধনাগারে ফেরত নিয়ে আসা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে জানালেন ইডির আইনজীবী।

হাই কোর্টে ইডির দাবি, অনুব্রত যদি অসুস্থ হন, পরে যদি অসুস্থ বোধ করেন, তবে প্রয়োজনে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে দিল্লি এমসে নিয়ে যেতে পারে তারা। সেখানে সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা পাবেন তৃণমূল নেতা।

Advertisement

দিল্লি যাওয়া আটকাতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার তৃণমূল নেতা অনুব্রত। শনিবার আদালতে শুনানি চলাকালীন তৃণমূল নেতার আইনজীবী জানান, শারীরিক ভাবে অনুব্রত অসুস্থ। যার প্রেক্ষিতে ইডি জানায়, প্রয়োজনে দিল্লি এমসে চিকিৎসার বন্দোবস্ত হবে অনুব্রতের। বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর এজলাসে অনুব্রতের আইনজীবী জানান, দিল্লি হাই কোর্টে ইডি মৌখিক ভাবে আশ্বাস দিয়েছিল ওই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাজিরা করানো হবে। যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর পর্যবেক্ষণ, ‘‘এত গুরুত্বপূর্ণ মামলা। আর নির্দেশনামায় কিছু নেই। আপনারা বলছেন মৌখিক ভাবে আশ্বাস দিয়েছিল ইডি। ৪ মাস ধরে মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে ছিলেন। এক বার মনে হল না নির্দেশনামায় বিষয়টি উল্লেখ করা প্রয়োজন? এখানে বার বার দেখেছি মৌখিক আশ্বাস নির্দেশনামায় উল্লেখ করতে বলেন। তবে দিল্লি হাই কোর্টে এটা করলেন না কেন? যেখানে আপনাদের অভিযোগ হচ্ছে ইডি আপনাদের মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছেন।’’

পাল্টা অনুব্রতের আইনজীবী জানান, গত ২১ ডিসেম্বর ২০২২ জেল কর্তৃপক্ষকে ইমেল করে ইডি। জানানো হয়, এখনই কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। তা ছাড়া অনুব্রতের সমস্যা রয়েছে। তিনি অসুস্থ। আসানসোলের সিবিআই আদালত পর্যাপ্ত চিকিৎসার কথা জানিয়েছেন। তাই যে কোনও বিশেষজ্ঞকে দিয়ে তাঁর চিকিৎসা করানো হোক। সেখান থেকে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত স্থগিত রাখা হোক হাজিরার নির্দেশ। ১৭ ডিসেম্বর দিল্লি হাই কোর্টে শুনানি রয়েছে। ওই দিন পর্যন্ত রক্ষাকবচ দেওয়া হোক।

এর পর বিচারপতি চৌধুরীর প্রশ্ন, ‘‘আসানসোলের সিবিআই আদালত অনেকটা পোস্ট অফিসের মতো। আর আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষ কী ভুল করেছেন? তাঁদের কাছে অনুব্রত মণ্ডলকে হাজির করানোর জন্য ওয়ারেন্ট রয়েছে।’’ ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘কলকাতা এবং দিল্লি দুই হাই কোর্টে তথ্য গোপন করা হয়েছে। দুই জায়গায় মামলা করা হয়েছে এটা কোথাও জানানো হয়নি। এই সব যুক্তি শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে বলা হয়েছিল। আদালত রক্ষাকবচ দেয়নি।’’ ইডির আইনজীবী হাই কোর্টে জানান, জেল হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জেলে ফেরত আসছেন।যদি অনুব্রত অসুস্থ হন তবে প্রয়োজনে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হবে দিল্লির এমসে। সেখানে সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা পাবেন।

এর পর অনুব্রতের বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য করেন ইডির আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘এক হাই কোর্ট থেকে অন্য হাই কোর্টে আবেদন করছেন অনুব্রত। তথ্য গোপন করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ছুটির দিনে আদালতের সময় নষ্ট করা হয়েছে। একজন আইনজীবী হিসাবে বলব, বড় জরিমানা করা উচিত (অনুব্রতের)। প্রশ্ন করেন, ‘‘পছন্দের রায় না পেয়েই কি বার বার আদালত পরিবর্তন? এমনকি, শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে জানানো হয়েছে, এখান থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। অথচ শুনানি হচ্ছে। অনুব্রত একজন নীতিহীন বিচারপ্রার্থী।’’

আরও পড়ুন
Advertisement