সন্দেশখালির নির্যাতিতা তরুণীর বাড়িতে সর্ব ক্ষণের পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ আনা তরুণীর বাড়িতে সর্ব ক্ষণের পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ওই মামলার তদন্ত কতটা এগোল তার রিপোর্ট আগামী সোমবার পুলিশকে আদালতে জমা দিতে হবে।
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর শাগরেদদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক তরুণী। অভিযোগ, গত বছর মে মাসে সেখানকার তৃণমূল নেতা ও তাঁর দলবল মিলে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন। তরুণীর অভিযোগ, পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। এফআইআর দায়ের করলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এই মর্মে সোমবারই আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তরুণী। মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
বুধবার ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতির নির্দেশ, নির্যাতিতার বাড়িতে ২৪ ঘণ্টার পুলিশ নিরাপত্তা দিতে হবে। রাজ্যের আইনজীবীর তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনায় তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। চার্জশিট দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। ওই দিন পুলিশকে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
হাই কোর্টে ওই তরুণী জানান, অভিযুক্তেরা তাঁকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন, অথচ পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না। এর পরেই পুলিশের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে আদালত। সঙ্গে তরুণীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তাঁর বাড়ির বাইরে পুলিশ প্রহরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের গোড়ায় সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। এলাকার ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে রেশন দুর্নীতির তদন্তে এসে আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিক ও আধাসেনা জওয়ান। তার পর আন্দোলনে নামেন দ্বীপ এলাকার বহু মানুষ। এলাকার অনেক কৃষিজমি জোর করে দখল করে মাছের ভেড়ি বানানোর অভিযোগ ওঠে শাহজাহান এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তাঁর একাধিক শাগরেদের বিরুদ্ধে স্থানীয় মহিলাদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগও সামনে আসে। এর কিছু দিন পরেই রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন শাহজাহান ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা।