রেশন ‘দুর্নীতি’তে ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অসুস্থ। জেল হেফাজতে থাকাকালীন ধারাবাহিক ভাবে তাঁর ওজন কমছে। আদালতে এমনটাই দাবি করলেন তাঁর আইনজীবী। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বুধবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে জ্যোতিপ্রিয়ের জামিনের আবেদন করা হয়েছে। তাঁর আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় আদালতে জানিয়েছেন, জেলে থাকাকালীন জ্যোতিপ্রিয়ের ওজন ২৫ কেজি কমে গিয়েছে। বর্তমানে তাঁর ওজন ৩৭ কেজি বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বুধবার আদালতের শুনানিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। তাঁর মাথায় সাদা ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল। জ্যোতিপ্রিয়ের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল অসুস্থ। বুধবারও জেলে তাঁর কপাল থেকে রক্তপাত হয়েছে। মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।
আদালতে বালুর আইনজীবীর সওয়াল, গ্রেফতারির পর প্রথম দিন আদালতে হাজির হয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। তাঁকে সে দিন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর শরীরের দু’টি কিডনি ঠিক মতো কাজ করে না। আইনজীবী জানিয়েছেন, একটি কিডনি ৭৪ শতাংশ এবং অন্যটি ২৬ শতাংশ কাজ করে। কোভিডের সময়ে জ্যোতিপ্রিয়কে দু’বার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল বলেও জানান তিনি। সে সময়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন বালু।
জ্যোতিপ্রিয়ের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের বাঁচার সম্ভাবনা কতটা, তা নিয়েই তাঁরা চিন্তিত। তিনি দীর্ঘ দিনের সুগারের রোগী। কিডনির সমস্যা রয়েছে। তাঁর শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
আদালতে জ্যোতিপ্রিয়ের স্বাস্থ্যের প্রসঙ্গে বিচারক এবং আইনজীবীদের কথোপকথনের কিছু অংশ নীচে তুলে দেওয়া হল—
জ্যোতিপ্রিয়ের আইনজীবী মিলন: আমার মক্কেলের মূল সমস্যা ডায়াবিটিস। সুগার ৩৭০ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ক্রিয়েটিনিন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
বিচারক: কিন্তু তা ‘অ্যালার্মিং’ (ভয় পাওয়ার মতো) নয়।
আইনজীবী মিলন: অগস্টে এটি দ্বিগুণ ছিল।
বিচারক: পটাশিয়াম, সোডিয়াম ঠিক আছে।
বালুর হয়ে তাঁর আইনজীবী মিলন: আমার ওজন ৩৭ কেজি হয়ে গিয়েছে। আমি কি অসুস্থতার ভান করছি? অ্যাম আই ফেকিং মাই ইলনেস?
বিচারক: আমি সেটা বলছি না। আমি ডাক্তার নই। রিপোর্ট দেখে বলছি।
ইডির আইনজীবী: উনি এতই যদি অসুস্থ, তা হলে এসএসকেএম হাসপাতাল ওঁকে ছেড়ে দিল কেন? এক বার ওই হাসপাতালে গেলে আর বেরোতে চান না। ১৫ দিন করে থেকে যান। আদালত থেকে রিপোর্ট চাওয়া হলে আবার বেরিয়ে আসেন।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী মঙ্গলবার। সে দিন এ বিষয়ে ইডি তাদের বক্তব্য জানাবে।