Abhishek Banerjee

রাজঘাটের অবস্থানে অমিত শাহের পুলিশের ‘বাধা’, সাংবাদিক বৈঠক অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরলেন অভিষেক

দিল্লি পুলিশের হুইসলের নিরন্তর শব্দে কথা বলা সম্ভব হচ্ছিল না। তার পরও অভিষেক চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর সাংবাদিক বৈঠক। কিন্তু এর পর মাইকে ঘোষণা করে তাঁকে এলাকা ছাড়তে বলা হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:০৩
তখনও সাংবাদিক বৈঠক চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তখনও সাংবাদিক বৈঠক চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

দিল্লির রাজঘাটে সাংবাদিক বৈঠক শেষ করতে পারলেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেই তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দিল দিল্লি পুলিশ। কার্যত তাড়া করে তাঁরা রাজঘাট থেকে বাইরে বের করে দিলেন ন্যায্য পাওনার দাবি নিয়ে দিল্লিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যোগ দেওয়া তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের।

Advertisement

সোমবার ছিল তৃণমূলের ‘মিশন দিল্লি’র প্রথম দিন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযানে বারবার বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ এনেছে তৃণমূল। দেখা গেল কর্মসূচির প্রথম দিনেও তার ব্যত্যয় হল না। শুরুতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক অমিত শাহের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশের বাধার মুখোমুখি হলেন তৃণমূলের নেতা এবং কর্মীরা।

সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ রাজঘাটের সামনে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। সেই সাংবাদিক বৈঠক কিছু ক্ষণ চলার পরই দিল্লি পুলিশের তরফে বার বার বাধা আসতে শুরু করে। অভিষেককে ঘিরে তৃণমূলের নেতা, সাংসদ এবং বিধায়কদের যে ভিড় ছিল, সেখানে কার্যত ঢুকে পড়েই এক পুলিশ কর্মীকে বলতে শোনা যায়, অনেক হয়েছে। এ বার কথা বন্ধ করতে হবে। ফাঁকা করে দিতে হবে রাজঘাত চত্বর।

বৈঠক থামিয়ে অভিষেক তাঁর কাছে জানতে চান, কেন? কী অসুবিধা হচ্ছে। তাঁরা শান্তিুপূর্ণ ভাবে যা করার করছেন। জবাবে তাঁকে বলা হয়, গান্ধী জয়ন্তীতে রাজঘাটে সাধারণ মানুষ আসবেম। তাদের জন্য গেট খুলতে হবে। তাই আন্দোলনকারীদের এলাকা ছেড়ে দিতে হবে। কথাগুলি কিছুটা রুঢ় স্বরেই বলতে শোনা যায় দিল্লি পুলিশের ওই কর্মীকে। তাঁর সঙ্গে এক প্রস্ত কথা কাটাকাটিও হয় অভিষেকের। তৃণমূল সাংসদ তাঁদের বলেন, ‘‘আপনারা গেট খুলে দিন। মানুষকে আসতে দিন। আমরা কারও অসুবিধা সৃষ্টি করছি না। ’’ কিন্তু দিল্লি পুলিশ সে কথা না শুনেই এর পর ক্রমাগত হুইসল বাজাতে শুরু করে।

দিল্লি পুলিশের হুইসলের সেই নিরন্তর শব্দে কথা বলা সম্ভব হচ্ছিল না। তার পরও অভিষেক তাঁর সাংবাদিক বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এর পর মাইকে ঘোষণা করা শুরু হয়। দিল্লি পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা তাঁকে এবং তৃণমূল নেতৃত্বকে এলাকা ছাড়তে বলেন। অভিষেকদের বলা হয়, অবিলম্বে যেন জায়গাটি ফাঁকা করে দেওয়া হয়। তাঁরা যেন পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেন। পরমুহূর্তেই দেখা যায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। নিরপত্তারক্ষীরা ঢুকে পড়েছেন তৃণমূলের জমায়েতের ভিতরে।

এর পরেই অভিষেক সাংবাদিক বৈঠক অসম্পূর্ণ রেখে তাঁর গাড়ির কাছে চলে আসেন। বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন এলাকা ছেড়ে। দেখা যায়, তৃণমূলের অন্য কর্মী সমর্থকদের কার্যত রাজঘাট থেকে তাড়া করে বের করে দিচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। লাঠি উঁচিয়ে ছুটতে দেখা যায় অনেককে।

তৃণমূলের কিছু কর্মী সমর্থক মারধরের অভিযোগও করেছেন। তৃণমূলের বিধায়ক এবং সাংসদদের অভিযোগ, ‘‘গান্ধী জয়ন্তীর দিন আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলাম তার পরও আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হল। শুধু তা-ই নয়, মহিলাদের গায়ে হাত দেওয়াও হয়েছে।’’ যদিও এই ঘটনার পর তৃণমূলের তরফে বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন
Advertisement