TMC's Protest in Delhi

‘নম্বর ওয়ান মূর্খ’, দিল্লির বিশেষ ট্রেন ‘বাতিল’ নিয়ে সুকান্তকে পাল্টা কটাক্ষ অভিষেকের

বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, “আজকে সুকান্ত মজুমদার বলছে আবেদন করা হয়নি। ওটা হচ্ছে একটা মূর্খ। নম্বর ওয়ান মূর্খ। আবেদন করা না হলে রেল টাকা জমা নিল কেন?”

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:২৫
Abhishek Banerjee attacked State BJP Chief Sukanta Majumder on Train cancellation in Rajghat

সুকান্ত মজুমদার (বাঁ দিকে) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে ‘নম্বর ওয়ান মূর্খ’ বলে কটাক্ষ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে দলের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী দিল্লির রাজঘাটে যান অভিষেক-সহ তৃণমূলের অন্য নেতারা। গান্ধীজয়ন্তীকে মহাত্মাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানেই ধর্না অবস্থানে বসে পড়়েন তাঁরা। অভিষেকদের হাতে ছিল কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দ্রুত অর্থ মঞ্জুর করার দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড। দুপুর ১টা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা ধর্না চলার পর রাজঘাটের বাইরে বেরোন অভিষেকেরা। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তৃণমূলের বিশেষ ট্রেন বাতিল নিয়ে সুকান্তের দাবিকে নস্যাৎ করে তাঁকে ‘মূর্খ’ বলেন অভিষেক।

Advertisement

অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের ‘মিশন দিল্লি’ কর্মসূচি কেন ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘লোকদেখানো’ তা জানাতেই সোমবার বিজেপির সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি। সেখানে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ সাহায্য বন্ধ করার কারণ হিসাবে বাংলার সরকারের ‘দুর্নীতি’কেই দায়ী করেন বিজেপি নেতারা। সাংবাদিক বৈঠকে হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন সুকান্তও। সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেককে কার্যত বাংলার প্রশাসকের মর্যাদা দিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তো নামেই। পিছন থেকে তো সরকার চালান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই!’’

সোমবার ওই সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচির জন্য ট্রেন না পাওয়া প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন সুকান্ত। সেখানেও তিনি আক্রমণ করেন অভিষেককেই। সুকান্ত বলেন, ‘‘ঠিক করে আবেদন করেননি। তাই ট্রেন পাননি। আর এখন ওঁরা নরেন্দ্র মোদীকে দুষছেন।’’ সুকান্তের এই দাবির প্রেক্ষিতেই তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করেন অভিষেক। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ প্রশ্ন তোলেন, রেলের কাছে আবেদন করা না হলে কর্তৃপক্ষ টাকা জমা নিল কেন? তাঁর কথায়, “আজকে সুকান্ত মজুমদার বলছে আবেদন করা হয়নি। ওটা হচ্ছে একটা মূর্খ। নম্বর ওয়ান মূর্খ। আবেদন করা না হলে রেল টাকা জমা নিল কেন? টাকাটা কি ভূতে দিল না কি ভূতে এসে জমা নিল?” জমা নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার কথা রেল ইমেল করে জানিয়েছে বলেও দাবি করেন অভিষেক। ট্রেন বাতিল করে তৃণমূলের কর্মসূচি ভন্ডুল করার পরিকল্পনা করেছিল বলেও অভিযোগ করেন অভিষেক। তা সত্ত্বেও যে তৃণমূল দমে যায়নি, তার বিবরণও তুলে ধরেন অভিষেক।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার তৃণমূলের দিল্লিযাত্রার ট্রেনের অনুমোদন পাওয়া যাবে না জানিয়ে রেল চিঠি দেওয়ার পরেই অভিষেক বলেছিলেন, “মোদী সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ।” তাঁর সরকার ভয় পেয়েছে বলেই ট্রেন দেওয়া হয়নি তৃণমূলকে। সুকান্ত ট্রেন প্রসঙ্গে বলতে গিয়েও টেনে আনলেন অভিষেকের মন্তব্যকেই। ট্রেন না পেয়ে শনিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম এবং বেশ কিছু জেলা থেকে বাস ছাড়ে তৃণমূল। ওই বাসে করেই দিল্লি পৌঁছন তৃণমূলের কর্মীসমর্থক এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে ‘বঞ্চিত’ উপভোক্তারা।

তৃণমূলের কর্মসূচি ঘিরে রাজঘাটে সাময়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ রাজঘাটের সামনে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করছিলেন অভিষেক। সেই সাংবাদিক বৈঠক কিছু ক্ষণ চলার পরই দিল্লি পুলিশের তরফে বার বার ‘বাধা’আসতে শুরু করে। এক পুলিশ কর্মীকে বলতে শোনা যায়, অনেক হয়েছে। এ বার কথা বন্ধ করতে হবে। ফাঁকা করে দিতে হবে রাজঘাট চত্বর। তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের কার্যত রাজঘাট থেকে তাড়া করে বার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে। কিছু কর্মী সমর্থক মারধরের অভিযোগও করেন। তৃণমূলের বিধায়ক এবং সাংসদদেরা অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘গান্ধীজয়ন্তীর দিন আমরা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলাম। তার পরও আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হল। শুধু তা-ই নয়, মহিলাদের গায়ে হাত দেওয়াও হয়েছে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন