রুমানা সুলতানা নিজস্ব চিত্র
উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেলেন মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দির ছাত্রী। কান্দি থানার শিবরামবাটি এলাকার বাসিন্দা রুমানা সুলতানার সাফল্যে খুশি তাঁর পরিবার। তিনি চান বড় হয়ে চিকিৎসক হতে।
কান্দির রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী রুমানা। ২০১৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পঞ্চম স্থান দখল করেছিলেন। দু’বছর আগে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় ৬৮৭ নম্বর পেয়েছিলেন। তার পর ওই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন বিজ্ঞান বিভাগে। বিজ্ঞান পড়তেই ভালবাসেন রুমানা। রুমানার বাবা রবিউল আলম ভরতপুর গয়েশাবাদ অচলা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক। মা সুলতানা পারভিন শিক্ষিকা। করোনা পর্বের মধ্যেই মেয়ের এই সাফল্যে খুশি গোটা পরিবার। রুমানার সাফল্যে উৎফুল্ল তাঁর শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং প্রতিবেশীরা।
করোনার জন্য জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা দেওয়া হয়ে ওঠেনি রুমানার। সাংবাদিক বৈঠকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৯। তবে তাঁকে ‘প্রথম স্থানাধিকারী’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়নি। কারণ মাধ্যমিকের মতো এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকেও প্রকাশিত হয়নি মেধাতালিকা। রুমানা বলছেন, ‘‘প্রথম হিসাবে নাম তো বলা হয়নি। সংসদ ভেবেচিন্তে এই ফল প্রকাশ করেছে। আমি খুশি। মাধ্যমিক এবং একাদশ শ্রেণির ফল ভাল ছিল। তাই এমন ফল হয়েছে।’’
রুমানা আরও বলছেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। আমার একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা ভাল হয়েছিল। যেহেতু এ বার পরীক্ষা হয়নি, তাই বলব এতে বেশি গুরুত্ব না দিতে। যদি মূল ধারায় পড়াশোনা চালিয়ে যাই, তা হলে আমি ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চাই।’’ জেলার মেয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি ফেসবুকে একটি পোস্টও করেছেন।
রুমানার বাবা রবিউল বলছেন, ‘‘মেয়ের সাফল্যে আমি খুশি। ও ভবিষ্যতে বিজ্ঞানী হবে, এই আশা করি।’’ রুমানার মা ইংরেজির শিক্ষিকা। তিনি বলছেন, ‘‘পরীক্ষা হলে ভাল হত। তবে ও প্রথম হয়েছে এতে আমি গর্বিত।
রুমানার দাদু মহম্মদ সৈয়দ ছিলেন কান্দি কলেজের দর্শন শাস্ত্রের ছাত্র। ১৯৬২ সালে সাম্মানিক স্তরে দর্শনে দ্বিতীয় হয়েছিলেন তিনি। পেশায় তিনি ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। সেই স্মৃতিতে টান দিয়ে রুমানার দিদা সালেহার বানু বলেন, ‘‘রুমানা আমার স্বামীর ইচ্ছা পূরণ করেছে। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে। আজ আমি খুব খুশি।’’