Divorce

সর্ব ক্ষণ থাকেন শাশুড়ি, স্ত্রীর বান্ধবীও! ‘নিষ্ঠুরতা’ মেনে স্বামীর বিচ্ছেদের আর্জিতে সায় হাই কোর্টের

আদালতের পর্যবেক্ষণ, স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রাখতেও অস্বীকার করেছিলেন স্ত্রী। দীর্ঘ সময় তাঁরা আলাদা থাকতেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:২৮
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারীর স্ত্রী যা করেছেন, তা ‘নিষ্ঠুরতা’র শামিল।

ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারীর স্ত্রী যা করেছেন, তা ‘নিষ্ঠুরতা’র শামিল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

কোলাঘাটের সরকারি কোয়ার্টারে দিনের পর দিন থাকতেন স্ত্রীর পরিবার এবং বান্ধবী! স্ত্রী যখন থাকতেন না, তখনও থেকে যেতেন তাঁর পরিবার। এ রকমই আরও অভিযোগ জানিয়ে বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বামী। নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে তাঁর বিচ্ছেদের আবেদনে সম্মতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, স্ত্রী যা করেছেন, তা ‘নিষ্ঠুরতা’র শামিল।

Advertisement

মামলাকারীর আরও অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করেছিলেন স্ত্রী এবং তাঁর পরিবার। এর আগে নিম্ন আদালতে বিচ্ছেদের আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। গত ১৯ ডিসেম্বর নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে ওই ব্যক্তির বিচ্ছেদের আর্জি মেনে নিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। তাদের পর্যবেক্ষণ, ‘‘স্বামীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁর কোয়ার্টারে দিনের পর দিন থাকতেন স্ত্রীর আত্মীয় এবং বান্ধবী। এমনকি, তাঁর স্ত্রী যখন থাকতেন না, তখনও কোয়ার্টারে থাকতেন তাঁর আত্মীয়স্বজন। একে নিষ্ঠুরতা বলাই চলে, কারণ, এর ফলে আবেদনকারীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।’’

আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রাখতেও অস্বীকার করেছিলেন স্ত্রী। দীর্ঘ সময় তাঁরা আলাদা থাকতেন। এর ফলে কোনও ভাবেই আর তাদের সম্পর্ক মেরামতের জায়গায় ছিল না। স্বামীর আইনজীবীর দাবি, বিয়ের পরেও স্বামীর বদলে নিজের বান্ধবীর সঙ্গে বেশি সময় কাটাতেন ওই মহিলা। এটা ‘নিষ্ঠুরতা’রই শামিল।

২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিয়ে হয়েছিল দু’জনের। ২০০৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিচ্ছেদ চেয়ে মামলা করেন ওই ব্যক্তি। ২৭ অক্টোবর নবদ্বীপ থানায় স্বামী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। মামলাকারীর বাড়ি ওই থানা এলাকায়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮(এ) ধারায় মামলা রুজু হয়। আদালত ওই ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবারকে নির্দোষ বলে রায় দেয়। পাশাপাশি, এ-ও জানায়, তাঁর স্ত্রী মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। সেই কাগজপত্র হাই কোর্টে জমা করেছেন মামলাকারীর আইনজীবী। তিনি সওয়াল করে জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ করাও ‘নিষ্ঠুরতা’। এই প্রসঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারি বিচ্ছেদের মামলা করার আগে তাঁর স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি থানায়। এমনকি ওই মহিলা যখন কোলাঘাটের কোয়ার্টারে থাকতেন না, তখনও সেখানে তাঁর মা, বান্ধবী থাকতেন। এর থেকেই স্পষ্ট যে, স্বামীর বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে যে অভিযোগ এনেছেন স্ত্রী, তা মিথ্যা। এই কারণে ওই ব্যক্তির বিচ্ছেদের আর্জিতে সায় দিয়েছে হাই কোর্ট।

Advertisement
আরও পড়ুন