TMC Inner Clash in Hooghly

কুরুচিকর পোস্টের ছবি হাতে থানায় ব্যাপারী-বর্ণিত ‘ফুলন দেবী’! বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ রুনার

বৃহস্পতিবার সকালে রুনা বলাগড় থানায় গিয়ে স্থানীয় বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে, সম্মানহানির পাশাপাশি তিনি প্রাণের ভয়ে আছেন বলেও দাবি করেছেন যুবনেত্রী।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বলাগড় শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৫৪
file image

বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী (বাঁ দিকে), যুব তৃণমূল নেত্রী রুনা খাতুন (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।

হুগলির বলাগড়-পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে। এ বার স্থানীয় বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন বলাগড়ের যুব তৃণমূল নেত্রী তথা জেলা পরিষদ সদস্য রুনা খাতুন। তাঁর অভিযোগ, ব্যাপারী তাঁর নামে আপত্তিকর শব্দবন্ধ ব্যবহার করে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন। রুনার দাবি, পরে বিধায়ক সেই পোস্ট মুছে দিলেও তার স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার বলাগড় থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের হয়।

Advertisement

ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন মনোরঞ্জন। সেখানে তিনি রুনাকে ‘ফুলন দেবী’ বলে অভিহিত করে তীব্র আক্রমণ শানান। নাম না করে এক জনের বিরুদ্ধে ‘বিহিত’ চেয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবেন বলেও সেই ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন ব্যাপারী। এর পর আসরে নামেন শাসকদলের যুবনেত্রীও। তিনি বিধায়ককে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘গো অ্যাহেড। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে যান। যদি টাকাপয়সা লাগে আমি সাহায্য করব। আমি এক জন শিক্ষিকা। আমার রুচিবোধ আছে। আপনি কাদা ছুড়তে পারেন। কিন্তু আমি সন্দেশ দিলাম।’’ এখানে অবশ্য দুই অসমবয়সির বাগ্‌যুদ্ধ থামেনি। বরং তা বিভিন্ন ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে মাঠে, ময়দানে, সমাজমাধ্যমে। তার মধ্যেই ভাইরাল বিধায়কের করা একটি সমাজমাধ্যম পোস্ট। যদিও সকালে সেই পোস্টটি মুছে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি রুনাদের। এই পোস্টের ভাষা নিয়ে আপত্তি জানিয়েই বৃহস্পতিবার থানায় যান তিনি। তার আগে, রাতেই রুনার ‘লোকজনের’ বিরুদ্ধে জিরাটের আহমেদপুরে বিধায়কের কার্যালয় ভাঙচুর করে তাতে কাদা লেপে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অনতিদূরে ব্যাপারী-ঘনিষ্ঠ এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতেও হামলা হয় বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় মনোরঞ্জন-ঘনিষ্ঠের বাড়ির লোকজনকে।

বৃহস্পতিবার সকালে বলাগড় থানায় আসেন রুনা। সেখানেই লিখিত আকারে নিজের দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। রুনা জানান, তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে গিয়ে বিধায়ক এত নীচে নেমে যাবেন, তা তিনি ভাবতেও পারেননি। যুবনেত্রীর কথায়, ‘‘আমাকে কিছুই বলতে বাকি রাখেননি। অথচ, আমার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত একটি প্রমাণও দিতে পারেননি। এখন আমি এবং আমার পরিবার অত্যন্ত আতঙ্কিত, নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। নিজেই লোক পাঠিয়ে নিজের অফিস ভাঙছেন, তার পর আমার নামে দোষ দিচ্ছেন। তাই পুলিশের দ্বারস্থ হলাম, মনোরঞ্জন ব্যাপারী এবং তাঁর শাগরেদদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য হলাম।’’

বৃহস্পতিবার সকালে যখন যুব তৃণমূল নেত্রী রুনা বলাগড় থানায় ব্যাপারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছেন, প্রায় একই সময় বিধায়ক সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি ‘আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল’ বলে দাবি করে লিখেছেন, ‘সেই পোস্ট লিখবার দশ কুড়ি সেকেন্ডের মধ্যে বুঝতে পারি, একটা মস্ত বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। সাথে সাথে সেটা মুছে দিই।’

পোস্টে আগাগোড়া নিজের করা আগের পোস্টের জন্য ভুল স্বীকার করেছেন ব্যাপারী। আগামিদিনে এমন শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিনি সতর্ক এবং বিরত থাকবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন