রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ ডানকুনিতে। — নিজস্ব চিত্র।
ডানকুনির কাছে চণ্ডীতলায় জাতীয় সড়কে বিক্ষোভ ট্রাক চালকদের। কেন্দ্রীয় আইনের প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেছেন তাঁরা। রাস্তায় জ্বালিয়ে দেন টায়ার। প্রায় দু’ঘণ্টা বন্ধ যান চলাচল। শেষে পুলিশ এসে লাঠি চালিয়ে হটায় বিক্ষোভকারীদের। আটক ১২ জন বিক্ষোভকারী। তার পরে জাতীয় সড়কে ফের স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।
একেই রবিবার। তার উপর বছরের শেষ দিন। বহু মানুষ ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক (দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে) ধরে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। সে সময় এই বিপত্তি। সে কারণে সমস্যায় পড়েন বহু যাত্রী। ভেস্তে যেতে বসে তাঁদের বেড়ানোর পরিকল্পনা। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। যদিও তার আগে দীর্ঘসময় যান বন্ধ থাকার কারণে বিপাকে পড়েন বহু মানুষ। আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও।
গত সপ্তাহেই সংসদে পাশ হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। সেখানে ‘হিট অ্যান্ড রান’ মামলায় কড়া শাস্তির কথা বলা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, পথ দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যু হলে চালক যদি প্রশাসনকে না জানিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান, তাহলে তাঁর ১০ বছর জেল হবে। সঙ্গে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে জানিয়েছেন, যাঁরা দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন, তাঁদের শাস্তি কিছুটা লঘু করা হবে। প্রসঙ্গত দেশে প্রতি বছর পথ দুর্ঘটনা (হিট অ্যান্ড রান)-এ মৃত্যু হয় ৫০ হাজার জনের।
এই আইনের বিরুদ্ধেই ডানকুনির কাছে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ট্রাক চালকেরা। তাঁদের দাবি, এই আইন চালু হলে চালকদের সমস্যা বেশি। তাঁদের একাংশের আশঙ্কা, দুর্ঘটনাগ্রস্তকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে গেলে জনরোষের শিকার হতে পারেন। মারধরে প্রাণও যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দোষ না থাকলেও অভিযুক্ত হতে যেতে পারেন চালক। এই নিয়ে ইতিমধ্যে আপত্তি জানিয়েছে পরিবহণ সংগঠনগুলি। রবিবার ডানকুনির কাছে জাতীয় সড়কে প্রতিবাদ করেন ট্রাক চালকেরা। এর পরেই বিক্ষোভকারীদের লাঠি চালিয়ে হটিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী চণ্ডীতলায় ট্রাক চালকদের জাতীয় সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আইন দেশের মানুষের ভালর জন্য হওয়া উচিত। আইন কোনও দিন নিপীড়নের মাধ্যম হওয়া উচিত নয়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার যে বিল এনেছে, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম এই আইন চালু হলে দেশে পুলিশিরাজ কায়েম হবে। দেশের মানুষের উপর নিপীড়ন হবে। যাঁরা এমন স্বৈরাচারী আইন আনছেন, তাঁদের নির্বাচনের মাধ্যমে পতন ঘটাতে হবে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’