মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ভাঙড়ের চারটি থানা আনুষ্ঠানিক ভাবে কলকাতা পুলিশের অধীনে আসতে চলেছে আগামী মঙ্গলবার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে দিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে ওই চার থানার উদ্বোধন করবেন। তার আগে কাশীপুর, পোলেরহাট, চন্দনেশ্বরে প্রস্তুতি তুঙ্গে।
গত জুলাই মাসেই ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় আনার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাঙড়ে কলকাতা পুলিশের আলাদা ডিভিশন গঠনের নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে। অবশেষে মঙ্গলবার ভাঙড়ের চারটি থানার উদ্বোধন হবে কলকাতা পুলিশের অধীনে। ওই চারটি থানা হল ভাঙড়, উত্তর কাশীপুর, পোলেরহাট এবং চন্দনেশ্বর। এর মধ্যে পোলেরহাট এবং চন্দনেশ্বর থানা দু’টি নতুন।
শনিবার রাতেই এই চার থানায় পুলিশের লাঠি, ওয়াকিটকি, হেলমেট-সহ নানা সরঞ্জাম এসে পৌঁছেছে। তত্ত্বাবধানে ছিলেন ভাঙড়ের জন্য নিযুক্ত ডেপুটি কমিশনার সৈকত ঘোষ। সোমবার থেকে থানাগুলিতে পুলিশের ফোর্স ঢোকার কথা। তার আগে রবিবার কলকাতার পুলিশ কমিশনারের এই চার থানা পরিদর্শন করতে আসার কথা।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় বিধানসভা। তৃণমূল এবং আইএসএ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার পরেও অশান্তি থামেনি ভাঙড়ে। অনেকের মৃত্যুও হয়েছে রাজনৈতিক হিংসায়। এক সময়ে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে ঢুকতেই পারছিলেন না বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। সেই পরিস্থিতিতে ভাঙড়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে গত জুলাই মাসে ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের অধীনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
ভাঙড়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্ক এখনও জারি। শনিবারই এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, তাঁর পুত্র হাকিমুল ইসলামকে খুন করার ষড়যন্ত্র করেছে ভাঙড়ে ক্ষমতাসীন আইএসএফ। নিরাপত্তার জন্য তাই মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে জানান আরাবুল। ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ অবশ্য তৃণমূল নেতার দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর মতে, প্রচারে থাকার জন্যই এ সব কৌশল অবলম্বন করছেন আরাবুল।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বার বার হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল আরাবুলের পুত্র হাকিমুলকে। তখন তাঁর নিরাপত্তার জন্য এক জন দেহরক্ষী নিযুক্ত করা হয়েছিল। এ ছাড়া, আরাবুলের নিরাপত্তার জন্য আগে থেকেই রয়েছেন তিন দেহরক্ষী। এর পরেও ভাঙড়ে নিরাপদ অনুভব করছেন না শাসকদলের এক সময়ের দাপুটে নেতা এবং তাঁর পুত্র। ফলে আগামী দিনে ভাঙড়ের নিরাপত্তা কলকাতা পুলিশের কাছে বড়সড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে, মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।