ক্ষোভপ্রকাশ অসিতের। নিজস্ব চিত্র।
সীমানা পাঁচিল থেকে প্রায় ১৫ ফুট দূরে বড় নিকাশি। সেখান থেকে আরও ১০ ফুটের বেশি দূরে জিটি রোড। প্রথমে ওই নালার আগে আরও একটি উঁচু পাঁচিল তুলে নিজের সীমানার ভিতরে আনা হয়েছে। পাশাপাশি জিটি রোডের আগে তিন নম্বর পাঁচিল (লোহার জাল ঘিরে) তুলে দখল করা হয়েছে। যার একপাশে আবার বড় নালার উপরেই তিনটি পাকা দোকান ঘর তৈরি করা হয়েছে। রবিবার সকালে চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া-২ পঞ্চায়েতের নলডাঙা ইএসআই ৩ নম্বর গেটের কাছে জনসংযোগ চলাকালীন বিষয়টি দেখে চক্ষু
চড়কগাছ এলাকার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের।
দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে অসিত ‘বেদখল’ হওয়া ওই জমিতে ঢুকে পড়েন। বাড়ির মালিক প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্মী ফণীভূষণ মিত্রকে ডেকে ধমক দেন। এরপরেই চুঁচুড়া থানার আধিকারিককে ফোন করে বিষয়টি জানান অসিত। পুলিশ জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর কোনও অভিযোগ জানায়নি। জানালে
অবশ্যই বিষয়টি দেখা হবে।
ফণীভূষণের দাবি, আশপাশের অনেকেই সরকারি জমি দখল করেছেন। তাই তিনিও সেই পথে হেঁটেছেন। তার জবাবে অসিত বলেন, ‘‘সরকার দখল করা জমি উদ্ধার করতে বলেছিল। কিন্তু আমিই চুঁচুড়ায় কাউকে উচ্ছেদ অভিযান করতে দিইনি। কিন্তু এখন দেখছি, আমি অপরাধ করেছি। তার প্রায়শ্চিত্ত করব।’’
ফণীভূষণ রাজ্য পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিকের বাবা। তাই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট শোরগোল পড়ে এলাকায়। মানুষ ভিড় জমান। অনেকেরই দাবি, কারও মদত ছাড়া এই কাজ সম্ভব নয়! কেউ কেউ বলেন, ‘‘বাড়ির লোক পুলিশ। তাই কেউ কিছু বলার সাহস পায়নি।’’ অসিত বলেন, ‘‘কে কেমন পুলিশ জানি না। কিন্তু পঞ্চায়েতের নজর এড়িয়ে এত বড় অন্যায় হতে পারে না! কারা এর পিছনে রয়েছে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’’
নলডাঙা থেকে ব্যান্ডেল মোড়ের দিকে যেতে জিটি রোডের দু’ধারের জায়গা দখল নতুন নয়। তবে, বেশিরভাগই দোকান-পাট। কোনওটারই পাকা ছাদ নেই। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে একাধিক পাঁচিল দিয়ে এ ভাবে সরকারি জমি দখল একটু ব্যতিক্রমী।
ওই বড় নালাই জিটি রোডের দু’পারের নিকাশি। নালার যে অংশ জিটি রোডের নীচ দিয়ে এপার-ওপার হয়েছে সেই অংশটিই ওই বাড়ির দখলে চলে গিয়েছে। তাই সেই অংশ কী ভাবে পরিষ্কার হয়, স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে প্রশ্ন। স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনওদিনই নালার ওই অংশ পরিষ্কার করা হয় না। ফলে, সামান্য বৃষ্টিতেই নলডাঙা জলমগ্ন হয়। জল জমে ইএসআই হাসপাতালেও। পঞ্চায়েতের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাড়ির ভিতরের অংশ পরিষ্কারে সরকারি সাফাই কর্মীরা যাবেন না। ফলে, নিকাশি সমস্যা রয়েই যাবে। শুরুতেই আটকালে এমনটা হত না।’’