ছেলের জন্মদিনে উদ্ধার হল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঝুলন্ত দেহ।
ছেলের জন্মদিনে উদ্ধার তৃণমূল নেতার ঝুলন্ত দেহ। সোমবার হুগলির খন্যান জিটি রোডের পাশে তাঁর নিজের দোকানেই মিলল দেহ। দেখতে পেলেন দোকানের এক কর্মী। পুলিশের ধারণা আত্মহত্ম্যা করেছেন তিনি। যদিও কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ব্যবসায় ধাক্কা খেয়েই এই পদক্ষেপ করেছেন।
মৃতের নাম রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (৩৫)। তৃণমূলের পাণ্ডুয়ার ইটাচুনা খন্যান অঞ্চলে কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। থাকতেন খন্যান স্টেশন রোডে। কাছেই জিটি রোডের পাশে ওষুধের দোকান লাগোয়া ডাক্তারের চেম্বারে তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলে।
দোকানের কর্মচারী বঙ্কিম ঘোষ জানিয়েছেন, সোমবার বিকাল ৫টার সময় তিনি দোকান খুলে দু’জনকে ওষুধ দেন। অন্য দিন ওই সময়ে বাইক নিয়ে রাজীব দোকানে চলে আসেন। সোমবার তাঁকে দেখতে না পেয়ে পাশের দোকানিকে রাজীবের বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন বঙ্কিম। তার পরেই তাঁর চোখে পড়ে, পিছনের ঘরে শাটার অর্ধেক খোলা। আলো জ্বলছে। ভিতরে ঢুকতেই রাজীবকে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলতে দেখেন। বঙ্কিম বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতেন। কিন্তু কী কারণে এই ঘটনা, বলতে পারব না।’’
ঘটনার খবর পেয়ে তৃণমূলের পাণ্ডুয়া ব্লক সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় খন্যানে পৌঁছে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে ও দল করেছে। ইটাচুনা খন্যান অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন রাজীব। পাশাপাশি ওই এলাকার একটি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ছিলেন। বিকাল ৪টে নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। এক জন শিক্ষিত ছেলে কী কারণে আত্মহত্যা করলেন, জানি না।’’
স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূল কর্মী সুকুর আলি সরকারের মতে, ব্যবসায় অনেক ক্ষতি হয়েছিল রাজীবের। সে কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। সুকুরের কথায়, ‘‘ওষুধের দোকান চালাতে গিয়ে অনেক ধার দিয়েছিলেন। গ্রামের গরিব মানুষরা ওষুধ কিনতে এলে ফেরাতেন না। আসলে রাজনীতি করতে গেলে মানুষের জন্য করতে হয়। অল্প অল্প করে অনেক টাকা ব্যবসায় ঢুবে যায়। সেই টাকা আর আদায় করতে পারছিলেন না। একটা অবসাদ ছিল।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজীবের ন’বছরের একটি ছেলে রয়েছে। সোমবার ছেলের জন্মদিন।
পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আত্মহত্যার কারণ জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।