অভিনেত্রী করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ দিলেন ডায়েট পরামর্শ। ছবি: সংগৃহীত।
ফিট থাকতে গেলে মেদ ঝরাতে হবে। ওজন বশে রাখতে খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চায় নজর দিতে হবে, জানেন আট থেকে আশি। সমাজমাধ্যমে চোখ রাখলেই পাওয়া যায় ওজন কমানোর নানা টিপ্স। কেউ দাবি করেন, তরল খাবার খেয়ে ২০ কেজি ওজন ঝরিয়েছেন। কারও দাবি, ফল মিলেছে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এ। তারকারা বলছেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাবারের পরিমাপ বোঝা খুব জরুরি। আর এই সব শুনেই আপনিও নিজের মতো করে বানিয়ে ফেলেছেন ডায়েট। ভাবছেন, পুষ্টিকর খাবারে ঠাসা এমন খাদ্যতালিকায় ওজন ঝরতে বাধ্য।
কিন্তু যা ভাবছেন, তা আদৌ ফলদায়ক কি? বি-টাউনের অন্যতম ফিট অভিনেত্রী করিনা কপূর। তিনি পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকরের পরামর্শ মেনে খাওয়াদাওয়া করছেন বেশ কয়েক বছর। বলিউডের অনেক তারকাই রুজুতার কথা অক্ষরে অক্ষরে মানেন। তারকাদের সেই পুষ্টিবিদই বলছেন, ডায়েট অনুপযুক্ত কি না বোঝার ৩ সহজ শর্ত রয়েছে।
সেগুলি কী? ডায়েট নিয়ে সারা দিন ভাবনাচিন্তা করতে হলে সেটাই ভুল। পেটে খিদে, চোখে ঘুম নেই। অথচ খেতে ভাল লাগছে না, তেমন খাবার খেয়ে যেতে হচ্ছে। সেটা কখনও শরীরের উপযোগী ডায়েট হতে পারে না, বলছেন রুজুতা।
ডায়েটের ভুলের ৩ শর্ত
প্রথম শর্ত, যে খাবারের স্থানীয় ভাষায় কোনও নাম নেই, যে সমস্ত খাবার এত কাল খাওয়ার চল ছিলই না, সে সব পদ ডায়েটে রাখা অত্যাবশ্যক নয়। সেই সব খাবারই দিনভর খাবারের তালিকায় থাকা ঠিক নয়। উদাহরণস্বরূপ গ্রিক ইয়োর্গাট, অ্যাভোকাডো, কিনোয়ার কথা তুলে ধরেছেন তিনি।
দ্বিতীয় শর্ত, ফিশ অয়েল, ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন, প্রোটিন পাউডার— দিনভর খাবারের নানা রকম সাপ্লিমেন্ট থাকছে? খাবার কম, সাপ্লিমেন্ট বেশি, তা হলে সেই ডায়েটও উপযুক্ত নয়। দৈনন্দিন খাবার থেকেই যাতে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়, সে ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ। যে কোনও পুষ্টিবিদই ‘ব্যালান্সড ডায়েট’-এর কথা বলেন। যেখানে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন, খনিজ, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের উপযুক্ত ভারসাম্য থাকবে।
তৃতীয় শর্ত, শয়নে-স্বপনে শুধু সুস্বাদু খাবারের চিন্তা, অথচ দিনরাত খাচ্ছেন এমন সব পদ, যেগুলি খেতে ভাল লাগছেই না। যে খাবার মজা করে খাওয়া যায় না, সেই ডায়েটও উপযুক্ত হতে পারে না। রুজুতার কথায়, একটা রুটি বেশি খাব, একটা আইসক্রিম খেলে কী হবে, এই ভাবনা দিন থেকে রাত চলতে থাকলে সেটা আদর্শ ডায়েট হতে পারে না। মানুষের জন্য ডায়েট, ডায়েটের জন্য মানুষ নয়।
রুজুতার পরামর্শ, স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার, যা খেতে ভাল লাগে সেগুলি রাখা দরকার খাবারের তালিকায়। একই সঙ্গে পুষ্টিবিদ বলছেন, এক ধাক্কায় অনেকটা ওজন কমানোর ভাবনা ছেড়ে ফিট থাকায় জোর দিতে। মেদ ঝরাতে হলে, তা হওয়া উচিত সময় মেনে। তাড়াহুড়োয় লাভের বদলে ক্ষতি হতে পারে।