Renovation Work

টাকা পেয়েও কাজ হয়নি শৌচাগারের, প্রশ্নে ‘নির্মল জেলা’

হাওড়া জেলাকে ‘উন্মুক্ত শৌচমুক্ত’ বা ‘নির্মল জেলা’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে ২০১৯ সালে। সে সময়ে জেলায় ৮০ শতাংশ বাড়িতে শৌচাগার ছিল। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, পরবর্তীকালে শৌচাগার-যুক্ত বাড়ির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৮ শতাংশে।

Advertisement
নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৪১

— প্রতীকী চিত্র।

প্রথম পর্যায়ের টাকা পাওয়ার পরেও শৌচালয় কাজ না করার অভিযোগ উঠেছে উলুবেড়িয়া ১ ব্লকে শতাধিক পরিবারের বিরুদ্ধে। ফলে তাঁরা যেমন দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকা পাননি, তেমনই সেই সব শৌচাগারগুলিও গড়ে ওঠেনি।

Advertisement

হাওড়া জেলাকে ‘উন্মুক্ত শৌচমুক্ত’ বা ‘নির্মল জেলা’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে ২০১৯ সালে। সে সময়ে জেলায় ৮০ শতাংশ বাড়িতে শৌচাগার ছিল। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, পরবর্তীকালে শৌচাগার-যুক্ত বাড়ির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৮ শতাংশে। এই অবস্থায় উলুবেড়িয়া ১ ব্লকে এতগুলি পরিবার টাকা পেয়েও শৌচাগার না করায় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে।

জেলায় মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক তপন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উলুবেড়িয়া ১ ব্লকে যাঁরা টাকা পেয়েও শৌচাগার করেননি, তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা হবে। প্রয়োজন হলে বাকি পাঁচ হাজার টাকা তাঁদের দিয়ে বলা হবে, শৌচাগার করে নেওয়ার জন্য।’’

মঙ্গলবার ছিল বিশ্ব শৌচাগার দিবস। এ দিন জেলা জুড়ে নানা অনুষ্ঠান হয়। জেলার একটি অনুষ্ঠান শেষে তপন বলেন, ‘‘সরকার চায় জেলার একটি পরিবারও যেন শৌচাগারের বাইরে না থাকে। সেই মতো প্রতিটি পরিবারেই শৌচাগার করার জন্য বিশেষ অভিযান চালানো হবে।’’

উলুবেড়িয়া ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, এই ব্লকে চলতি আর্থিক বছরে ৯৬৩টি পরিবারে শৌচাগারের জন্য টাকা দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে সাড়ে আটশোর মতো পরিবার শৌচগার করেছে। কিন্তু বাকিরা প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েও কোনও কাজ করেনি বললেই চলে। ফলে তাদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হয়নি।

ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, যাঁরা প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েও সদ্ব্যবহার করেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে কোনও মতে গর্ত খুঁড়ে প্রথম কিস্তির টাকা খরচ করে ফেলেছেন। অনেকে আবার বড় মাপের শৌচাগার করার জন্য কুয়োর পিছনে প্রথম কিস্তির টাকা খরচ করে ফেলেছেন। নিয়মানুযায়ী, ঘর তৈরির কিছু কাজ প্রথম কিস্তির টাকায় করার কথা। কিন্তু কুয়োর পিছনেই প্রথম কিস্তির সব টাকা খরচ করে ফেলায় ঘরের কাজ হয়নি। কেউ আবার টাকা অন্য খাতে খরচ করে ফেললেও কোনও কাজ করেননি। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, উপভোক্তাকে ন্যূনতম ৯০০ টাকা দিতে হলেও মনে করলে তিনি আরও বেশি টাকা খরচ করে মনের মতো শৌচাগার করতে পারেন। সরকার অবশ্য ১২ হাজার টাকার বেশি দেয় না।

বিডিও রিয়াজুল হক বলেন, ‘‘যাঁরা টাকা পেলেও কোনও কাজ করেননি, তাঁদের শো-কজ় করা হয়েছে। তাঁরা অবশ্য জানিয়েছেন শৌচাগার করবেন।’’ এই সব পরিবারগুলির সদস্যেরা উন্মুক্ত জায়গাতেই শৌচকর্ম করছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। বিডিও বলেন, "আমাদের ব্লকে উন্মুক্ত জায়গায় শৌচকর্ম অনেকটাই বন্ধ। তাই যাঁরা প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েও শৌচাগার করেননি, তাঁরাও যাতে সেই ব্যবস্থা করেন— সে জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করা হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement