ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে অসুস্থ বৃদ্ধাকে উদ্ধারের চিত্র। — নিজস্ব চিত্র।
হুগলির উত্তরপাড়ায় একা একটি ফ্ল্যাটে থাকেন অশীতিপর বৃদ্ধা রেখা মুখোপাধ্যায়। গত কয়েক দিন ধরে তাঁর কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে আবাসনের বাসিন্দারা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখেন অসুস্থ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধা। রেখাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
উত্তরপাড়া পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের জেকে স্ট্রিটের জগন্নাথ অ্যাপার্টমেন্টের চার তলার একটি ফ্ল্যাটে রেখা দীর্ঘ দিন ধরে একাই থাকেন। এর আগে রেখা অসুস্থ হয়ে পড়ায় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের উত্তরপাড়া থানার ‘স্পর্শ’ টিম তাঁর দেখভালের দায়িত্ব নেয়। কিন্তু সম্প্রতি আবাসনের বাসিন্দারা লক্ষ করেন, কয়েক দিন ধরে ওই বৃদ্ধার কোনও সাড়াশব্দ নেই। আবাসিকরা উত্তরপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান দিলীপ যাদবকে খবর দেন। বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় কাউন্সিলর ডলি ঘোষ যাদব ‘স্পর্শ’ টিম নিয়ে ফ্ল্যাট উপস্থিত হন। তালা ভেঙে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
স্পর্শ টিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কৃষ্ণধন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরে বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে ঘরে পড়েছিলেন। আমি কাজে বাইরে থাকায় কয়েক দিন খোঁজ নিতে পারিনি। আবাসিকরা খবর দেন পুরপ্রধানকে। বৃদ্ধাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’
আবাসনের বাসিন্দা অঞ্জনা সাহা বলেন, ‘‘গত এক বছর ধরে বৃদ্ধাকে দেখার কেউ নেই। শুনেছি, ওঁর অনেক সম্পত্তি ছিল। এক আত্মীয় আগে আসতেন, কিন্তু এখন আর কেউ আসেন না। এক জন এসে খাবার দিয়ে যান। বৃদ্ধার কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে আমরা পুরপ্রধানকে লিখিত ভাবে জানাই। কাউন্সিলর খুব সাহায্য করেছেন। আর একটু দেরি হলে হয়তো বৃদ্ধাকে বাঁচানো যেত না। পুলিশ-প্রশাসনের উচিত, অবিলম্বে বৃদ্ধার চিকিৎসার পর কোনও বৃদ্ধাশ্রম বা সরকারি হোমে থাকার ব্যবস্থা করা। যেখানে সব সময় তাঁকে দেখাশোনার লোক থাকবে।’’
কাউন্সিলর ডলি ঘোষ যাদব বলেন, ‘‘খুবই খারাপ অবস্থা বৃদ্ধার। ওঁকে দেখাশোনার কেউ নেই। বৃদ্ধা সুস্থ হয়ে ফেরার পর আবাসনের বাসিন্দারা ওঁর আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে একটা ব্যবস্থা করবেন। আমরা সব রকম সাহায্য করব।’’