Hooghly Chinsurah Municipality

‘ভূতুড়ে’ কর্মী ধরতে বৈঠক চুঁচুড়া পুরসভায়

এক শ্রেণির পুরকর্মী কাজ করবেন, আর এক দল ছলনার আশ্রয় নিয়ে দিনের পর দিন বেতন পেয়ে যাবেন কেন, সেই প্রশ্নও জোরালো হচ্ছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:১২
হুগলি-চুঁচুড়া পৌরসভা।

হুগলি-চুঁচুড়া পৌরসভা। —ফাইল চিত্র।

ঘরে-বাইরে হইচই শুরু হওয়ায় ‘ভূতুড়ে কর্মী’ চিহ্নিত করতে বুধবার জরুরি বৈঠকে বসলেন হুগলি-চুঁচুড়া পুর-কর্তৃপক্ষ। তাঁরা কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

পুরপ্রধান অমিত রায় বলেন, ‘‘জরুরি ভিত্তিতে কিছু পদক্ষেপ আমরা কঠোর ভাবে করব। কাজ না করে পুরসভা থেকে বেতন তোলার দিন দ্রুত শেষ করতে আমরা সবাই বদ্ধপরিকর।’’

‘ভূতুড়ে’ কর্মী নিয়ে নাজেহাল পরিস্থিতি ৩০ ওয়ার্ডের এই পুরসভার। মাস গেলে লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন গলে যাচ্ছে, অথচ, খাতায়-কলমে থাকা বহু অস্থায়ী পুরকর্মী কী কাজ করেন, কর্তৃপক্ষই জানেন না! এমনকি, এমন বহু কর্মীকে চিহ্নিতই করা যায়নি বলে তাঁরা মানছেন। তবে, যাঁদের চিহ্নিত করা গিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে পুর-কর্তৃপক্ষ কেন কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারছেন না, সেই প্রশ্ন পুরসভার অন্দরেই উঠছে।

এক শ্রেণির পুরকর্মী কাজ করবেন, আর এক দল ছলনার আশ্রয় নিয়ে দিনের পর দিন বেতন পেয়ে যাবেন কেন, সেই প্রশ্নও জোরালো হচ্ছে। ‘ভূতুড়ে’ কর্মীদের নিয়ে এই ‘বোঝাপড়া’ অবিলম্বে বন্ধের কথাও বলছেন পুরকর্মীদের অনেকে। সূত্রের দাবি, বিভিন্ন বিভাগে দারোয়ানের সংখ্যায় গোঁজামিল রয়েছে। শহরে বিভিন্ন পার্ক বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দারোয়ানের সংখ্যা নিয়ে কারও দাবি ২৫০, কারও ৩৫০। পুরসভার কাছে সেই সংখ্যা সঠিক ভাবে যেমন জানা যায় না, সবাই কর্মরত তা জানারও কোনও নিশ্চয়তা নেই।

এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘ওই দারোয়ানেরা রাতে বাড়িতে ঘুমিয়ে পুরসভার বেতন নিয়ে সকালে অন্যত্র চাকরি করছেন কি না, বলা কঠিন। ওই সব দেখার জন্য পুরসভার কোনও নজরদারির পরিকাঠামো নেই। অর্থাৎ, চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশি তদন্তে সহায়তার জন্য ভিডিয়ো ফুটেজ পর্যন্ত মিলবে না।’’ এক শ্রেণির পুরকর্তার অভিযোগ, বহু কাউন্সিলর নিজের ওয়ার্ডে পাঁচ-ছ’জন করে ‘সর্দার’ (সাফাইকর্মীদের কাজের তদারকি করেন যাঁরা) পোস্টে কর্মী রেখেছেন। ৩০টি ওয়ার্ডে যাঁদের সংখ্যা একশোর বেশি। এক পুরকর্তা বলছেন, ‘‘এক সমাজসেবী কাউন্সিলর আগের পুরবোর্ডে একদিনে পঞ্চাশটির বেশি অস্থায়ী কর্মীর পদ অনুমোদন করিয়ে নিয়েছিলেন।’’

পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী বলছেন, ‘‘আমি নিজে সাড়ে তিনশো কর্মীকে চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে কাজে ফেরাচ্ছিলাম। সিসি ক্যামেরা থেকে পুরসভার গাড়িতে জিপিএস— সবই চালুর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ব্যবস্থা নিলেই বন্দুক আমার দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। না বর্তমান, না পূর্বতন— কোনও পুরবোর্ডের কর্তাদের সহযোগিতা পাইনি। পুরসভার আর্থিক হাল ফিরবে কী করে!’’

আরও পড়ুন
Advertisement