গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আগ্রা বেড়াতে গিয়েছিলেন হুগলির কোন্নগরের শান্তা শর্মা এবং তাঁর বান্ধবী ইফ্ফাত পরভিন। তাজমহল দেখতে ছেলে শ্রেয়াংশুও আবদার করেছিল। কিন্তু আট বছরের ছেলেকে সঙ্গে নেননি শান্তা। শুধু দু’জনেই বেড়াতে গিয়েছিলেন। কোন্নগরে শিশু খুনের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেল পুলিশ। শান্তা এবং পরভিনকে জেরা করে উঠে আসছে নানা তথ্য। জানা গিয়েছে, স্বামীর মাথায় টাক বলে তাঁকে পছন্দ করতেন না সন্তান খুনে অভিযুক্ত শান্তা।
পুলিশ এবং পরিবার সূত্রে খবর, প্রতি মাসেই শান্তার শ্বশুরবাড়িতে আসতেন প্রিয় বান্ধবী পরভিন। কোনও মাসে এক বার তো কোনও মাসে দু’বার। শান্তার স্বামী পঙ্কজ শর্মা জানাচ্ছেন, তাঁর অজান্তেও হয়তো পরভিন তাঁদের বাড়িতে আসতেন। তা ছাড়াও দুই বান্ধবীর নিয়মিত ফোনে কথাবার্তা হত। এমনকি, গভীর রাতেও ফোনে ‘আড্ডা’ দিতেন তাঁরা।
শিশু খুনে উঠে এসেছে সমকামী সম্পর্কের একটি সমীকরণ। তবে সে জন্য আট বছরের শিশুকে কেন খুন করতে গেলেন শান্তা, তার ঠিকঠাক কারণ এখনও জানা যায়নি। জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে শান্তা এবং পরভিন আগ্রা বেড়াতে যান। দুই বান্ধবী মিলে তাজমহল দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের কাউকে ভ্রমণসঙ্গী করেননি শান্তা। কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান অচ্ছেলাল যাদব বলেন, ‘‘তাজমহল প্রেমের প্রতীক। আসলে নিজেরা প্রেমে এমন মগ্ন ছিলেন যে, তাজমহল দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে ছেলেকেও জায়গা দেননি তাঁরা।’’
শ্রীরামপুর আদালত শান্তা এবং পরভিনকে নয় দিনের পুলিশি হেফাজত দেওয়ার পর তাঁদের দু’টি পৃথক থানায় রাখা হয়েছে। দু’জনকে দফায় দফায় জেরা করছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তদন্তকারীরা। শ্রীরামপুর মহিলা থানায় রয়েছেন পরভিন। উত্তরপাড়া থানায় বন্দি শান্তা। পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনেই দু’জনের সঙ্গে কথা বলতে উন্মুখ। দেখা করতে পারবেন না জেনে ফোনে হলেও এক বার কথা বলতে চেয়েছেন। এ নিয়ে পুলিশের কাছে প্রায় আবদার করেছেন শান্তা। সারা দিন কেমন কাটল, কে কী খেয়েছেন, কেমন আছেন— এ সব জানতে দু’জনেই পুলিশের কাছে খোঁজখবর করেছেন। কিন্তু, দু’জনেই শিশু খুনের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।