পদক ও ট্রফি নিয়ে শিউলি। নিজস্ব চিত্র ।
কয়েক মাস পরেই উচ্চ মাধ্যমিক। তার সঙ্গে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের প্রস্তুতি। তার মধ্যেও অনুরাগ এতটুকু কমেনি যোগাসনের প্রতি। উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টের মুখেই ৪৯তম সাব জুনিয়র ও জুনিয়র জাতীয় যোগা স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে জোড়া পদক জিতে নিল হিন্দমোটরের কোতরং জয়ন্তনগরের শিউলি দাস। তার ঝুলিতে একটি স্বর্ণপদক, একটি ব্রোঞ্জ।
সম্প্রতি ওই প্রতিযোগিতা হয় হিমাচলপ্রদেশের উনার ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে। ৮ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের ফ্রি ফ্লোর যোগা স্পোর্টসে শিউলি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সি মেয়েদের জুনিয়র ‘বি’ বিভাগে সে অর্জন করেছে তৃতীয় স্থান। গত বার জাতীয় প্রতিযোগিতা হয়েছিল গৌহাটিতে। সেখানে একটি সোনা জিতেছিল সে। অন্য বিভাগে পঞ্চম হয়েছিল। ফলে পদকের বিচারে গত বারের তুলনায় এ বার তার পারফর্ম্যান্স ভাল।
শিউলিদের বাড়ি আদতে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের প্রত্যন্ত কুড়ুম্বা গ্রামে। বাবা সরোজ দাস কর্মসূত্রে পরিবার সহ হুগলিতে চলে আসেন। ঠাকুরের কাঁসা-পিতলের বাসন তৈরির কারখানার শ্রমিক সরোজ। জয়ন্তনগরে তাঁরা ভাড়াবাড়িতে থাকেন। মা বুল্টি জানান, প্রাথমিক স্কুলে পড়ার সময় থেকেই শিউলির যোগাসন শেখা শুরু। জেলা পর্যায়ে ভাল ফলও করেছিল পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময়। তবে ডেঙ্গি হওয়ায় বেশ কিছু দিন তালিম নিতে পারেনি। বছর চারেক ধরে ফের পুরোদস্তুর অনুশীলন চালু।
শিউলি এখন অনুশীলন করে হিন্দমোটর যোগা অ্যান্ড কালচারাল অ্যাকাডেমিতে। কোচ মানিক প্রধান। মানিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করে বুল্টি বলেন, ‘‘হিন্দমোটরের শিবকালী মন্দিরে সপ্তাহে ছ’দিন প্রশিক্ষণ চলে। পড়া সামলে মেয়ে যেতে না পারলে কোচ বাড়িতে ডেকে ওকে শেখান। উনি অনেক সাহায্য করেন মেয়েকে।’’ তিনি জানান, আগামী জানুয়ারিতে সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক যোগাসন প্রতিযোগিতায় সুযোগ পেয়েছে শিউলি। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য সেখানে যাওয়া কঠিন।
উত্তরপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী শিউলি। তার স্বপ্ন আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় পদক জয়। তার কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাই। না হলে যোগাসন নিয়ে উচ্চশিক্ষা করতে চাই।’’ প্রত্যয়ী শোনায় তরুণীর গলা।