ঈশিতা বিশ্বাস (বাঁ দিকে) এবং দীপিকা চৌধুরী (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
নতুন বছরের শুরুতেই খোখো বিশ্বকাপের আসর বসছে ভারতে। রাজধানী দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে পুরুষ ও মহিলাদের ওই প্রতিযোগিতার বোধন আগামী ১৩ জানুয়ারি। ফাইনাল ১৯ জানুয়ারি। খোখো বিশ্বকাপ এ বারেই প্রথম। পুরুষ ও মহিলা— দুই বিভাগেই মোট ২৬টি দেশ যোগ দেবে। ভারতীয় দলে দেখা যেতে পারে হুগলির দুই কন্যাকে।
খোখো ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার আয়োজনে আজ, মঙ্গলবার থেকে ভারতীয় দল বাছাইয়ের শিবির শুরু হচ্ছে দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে। বাংলা থেকে তিন মহিলা খেলোয়াড় তাতে সুযোগ পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন হুগলির ভদ্রেশ্বরের বছর ঊনত্রিশের দীপিকা চৌধুরী এবং চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের বছর একুশের ঈশিতা বিশ্বাস। শিবিরে যোগ দিতে সোমবার বিমানে তাঁরা দিল্লি পৌঁছেছেন। তৃতীয় জন পূর্ব মেদিনীপুরের বনশ্রী সিংহ।
হুগলি জেলা খোখো অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ পাল জানান, মাস কয়েক আগে জাতীয় সিনিয়র প্রতিযোগিতায় বাংলার মেয়েরা ষষ্ঠ স্থানে শেষ করলেও দীপিকা ও ঈশিতা নজর কেড়েছিলেন। সেই সুবাদেই বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ডাক।
খোখো অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫৫ জন খেলোয়াড়কে নিয়ে বাছাই এবং প্রস্তুতি পর্ব চলবে আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। শিবিরের মাঝপথে ১৬ জনের দল বাছাই করা হবে। তার পরে চলবে প্রস্তুতি। খোখো-তে ডিফেন্ডার, রানার এবং অল রাউন্ডার থাকেন। হুগলির দুই কন্যাই অল রাউন্ডার। ভদ্রেশ্বরের খেয়ালি খেলাঘর ক্লাবের মাঠে প্রদীপ পালের কাছে প্রশিক্ষণ নেন দীপিকা। রবিবার বিকেলে এই ক্লাবের তরফে দীপিকা ও ঈশিতাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। খোখো-তে দু’জনেরই হাতেখড়ি প্রখ্যাত কোচ রাজেশ দত্তের কাছে। দু’জনেই জেলা, রাজ্য ও জাতীয় স্তরে খেলেছেন। সাউথ এশিয়ান গেমসে দীপিকা দু’বার এবং ঈশিতা এক বার খেলেছেন।
শারীরশিক্ষায় স্নাতকোত্তর দীপিকা ‘খেলো ইন্ডিয়া’র সুবাদে কল্যাণীর একটি স্কুলে অস্থায়ী শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে দীপিকা মেজো। ঈশিতারা তিন বোন। ঈশিতা ছোট। তিনি স্নাতক স্তরে শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন। ছোটবেলায় মেজদি গার্গীর খেলা দেখে খোখো-তে আগ্রহী হন ঈশিতা। বর্তমানে তিনি চুঁচুড়ার বেগুনতলা জাগরণী সঙ্ঘের মাঠে মিঠুন সরকারের কাছে প্রশিক্ষণ নেন।
দীপিকার বাবা রঞ্জন এবং ঈশিতার বাবা গোকুল— দু’জনেই দিনমজুর। সংসারের হাল ধরতে দীপিকার মা মীরা এবং ঈশিতার মা নীলু টুকিটাকি কাজ করেন। মেয়েরা ভারতীয় দলে সুযোগ পাবে, আশাবাদী দুই পরিবারই।
দীপিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। দিল্লি পৌঁছে ঈশিতা বলেন, ‘‘আশা করছি আমি আর দীপিকাদিদি দু’জনের গায়েই ভারতীয় দলের জার্সি উঠবে।’’ একই আশা জেলার খোখো মহলেরও।