Jiban Krishna Saha

ঘন ঘন আসছে গাড়ি, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ, ভোরের আলো ফুটতেই গ্রেফতার! জীবনকৃষ্ণের ৩২০ মিনিট

রবিবার রাতেই জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতারির প্রক্রিয়া শুরু করে সিবিআই। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁর বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। গ্রেফতারি এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বড়ঞা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৫৬
How CBI arrested TMC MLA Jiban Krishna Saha at night in Burwan.

সারারাত প্রস্তুতির পর ভোরবেলা জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। নিজস্ব চিত্র।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ, এঁদো ডোবায় পাঁক ঘেঁটে মোবাইলের খোঁজ, বড়ঞায় সিবিআইয়ের তৎপরতা দেখে আগেই বোঝা গিয়েছিল, বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারি স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু গ্রেফতারির প্রক্রিয়া যে এমন নাটকীয়তায় মোড়া হবে, মধ্যরাতের অন্ধকারে যে এমন উত্তেজনার ঢেউ উঠবে মুর্শিদাবাদের গ্রামে, তা হয়তো আগে থেকে কেউ আন্দাজ করতে পারেননি। অথচ হল তা-ই। রবিবার মাঝরাতে টান টান উত্তেজনায় ৩২০ মিনিট কাটাল বড়ঞা, অবশেষে গ্রেফতার হলেন পুকুরে ফোন ছুড়ে ফেলা তৃণমূল বিধায়ক।

রবিবার সকালে জীবনকৃষ্ণের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় ফেলে দেওয়া একটি মোবাইল ফোন। দিনভর তাকে ঘিরে চলতে থাকে পর্যালোচনা। শেষে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া মোবাইলটি আদৌ জীবনের নয়, বরং তা তাঁর স্ত্রীর। এর পর রবিবার রাতেই জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতারির প্রক্রিয়া শুরু করে সিবিআই। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁর বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে পৌঁছন অতিরিক্ত আরও ৪ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। গ্রেফতারি যে এ বার হতে চলেছে, তখনই এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়।

Advertisement

রাত ১টা নাগাদ দেখা যায়, জীবনের বাড়িতে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তাও যুক্ত করা হল। গ্রেফতারির প্রস্তুতি শুরু করলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। এর পর রাত ২টো ৩৫ মিনিট নাগাদ কলকাতা থেকে কেন্দ্রীয় সংস্থার ৪ জন উচ্চপদস্থ আধিকারিক বড়ঞার বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছন। তাঁদের সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর দু’টি গাড়ি। জওয়ানদের উপস্থিতিতে মধ্যরাতে জীবনের বাড়ির সামনে নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো হয়।

রাত ৩টে নাগাদ জীবনকৃষ্ণকে আরও এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ভোর ৪টে ১০ মিনিট নাগাদ বাড়িতেই বিধায়কের পরিবারের সদস্য অর্থাৎ মা এবং স্ত্রীকে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের হাতে অ্যারেস্ট মেমো তুলে দেয় সিবিআই। ৪টে ৫০ মিনিট নাগাদ সেই মেমোতে স্বাক্ষর করেন বিধায়কের স্ত্রী টগরি সাহা। বাইরে তত ক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গিয়েছে।

ভোর ৫টা ১৮ মিনিট নাগাদ জীবনকৃষ্ণকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। মোট ৬টি গাড়ির কনভয় তাঁকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় গাড়ি এগিয়ে চলে। জীবনকৃষ্ণের গাড়ি দুর্গাপুরে থামিয়ে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। তার পর কলকাতায় নিজাম প্যালেসের উদ্দেশে পাড়ি দেবে কনভয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement