(বাঁ দিক থেকে) কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অবিলম্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাই চান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সংবাদ সংস্থা পিটিআই রাজভবন সূত্র উল্লেখ করে জানিয়েছে, রাজ্যপাল রবিবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তখনই এ কথা বলেছেন। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি চান মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের অপসারণ নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিন। কারণ জনগণ সেই দাবি জানাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকতে বলেছেন রাজ্যপাল।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় প্রথম থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার দিন নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। দেরি করে এফআইআর দায়ের করা হয় বলেও অভিযোগ। এর পর প্রতিবাদ কর্মসূচি চলাকালীন আরজি করে যখন ভাঙচুর চালানো হয়, তখনও পুলিশের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি ক্রমে জোরালো হয়েছে।
কিছু দিন আগে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে সিপির পদত্যাগ চেয়ে লালবাজার অভিযান করেছিলেন চিকিৎসকেরা। লালবাজারের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন তাঁরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সিপির সঙ্গে তাঁরা দেখা করেন এবং স্মারকলিপি জমা দেন। সে সময় সিপির কাছেই তাঁর পদত্যাগের দাবিও জানান আন্দোলনকারীরা। সিপি তাঁদের জানান, তিনি মনে করেন না, তিনি কোনও ভুল করেছেন। উপরমহল থেকে নির্দেশ এলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
রবিবার রাজ্যপাল সে বিষয়েই সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতাকে। আরজি কর আবহে জনতার দাবি প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে নবান্নকে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, আরজি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা রাজ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সরকার তাতে চুপ করে থাকতে পারে না। সরকারকে সংবিধান এবং আইনের শাসন মেনেই চলতে হবে। জনগণের দাবি মেনে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে সেই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। আরজি করের ঘটনার এক মাস পূর্ণ হতে চলেছে সোমবার। ঘটনাচক্রে সে দিনই সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি রয়েছে। সিবিআই সোমবার শীর্ষ আদালতে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেবে। তার আগে রবিবার রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। মিছিল এবং মানববন্ধনে মুখর হয়ে উঠেছে কলকাতা এবং শহরতলি। এর মাঝে সোমবার নবান্নে প্রশাসনের পর্যালোচনা বৈঠকের ডাক দিয়েছেন মমতা। সেই বৈঠকে রাজ্যের সব দফতরের কর্তাদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। থাকবেন প্রত্যেক দফতরের মন্ত্রী, সচিব, ডিজি এবং এডিজি পদমর্যাদার আধিকারিক এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার। তার পরের দিন অর্থাৎ, মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে।