রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
হাওড়ার পর এ বার হুগলির অশান্তির ঘটনা নিয়েও কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, রিষড়ায় সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেছিলেন রাজ্যপাল। গোটা বিষয়টি নিয়ে দু’জনের মধ্যে বেশ কিছু ক্ষণ কথাবার্তা হয়েছে। তার পরেই বিবৃতি দেন রাজ্যপাল। বলেন, ‘‘গুন্ডা এবং দুর্বৃত্তদের লৌহকঠিন হাতে দমন করা হবে। গণতন্ত্রকে বিপথে চালিত করা যাবে না।’’
রবিবার রিষড়ায় বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের মিছিল ঘিরে অশান্তি বাধে। ইটবৃষ্টি ও আগুন ধরানোর অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ। তাঁকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে জখম হয়েছেন রিষড়া থানার ওসি পিয়ালি বিশ্বাস-সহ বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি জানান, এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। রিষড়া ও মাহেশ এলাকায় রবিবার রাত ১০টা থেকে সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘এই ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা কড়া হাতে দমন করবে রাজ্য। আগুন নিয়ে খেলার পরিণাম শীঘ্রই টের পাবেন আইনভঙ্গকারীরা। এমন শাস্তি দেওয়া হবে যে, দুষ্কৃতীরা তাদের জন্মদিনকে অভিশাপ দেবে!’’
দু’দিন আগে হাওড়ার শিবপুরের অশান্তি নিয়েও কড়া বিবৃতি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তখনও তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছিল। তার পর রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকাকে ডেকে হাওড়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর কাছ থেকে বিশদ রিপোর্টও নিয়েছিলেন আনন্দ। এর পরেই রাজভবন থেকে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ‘‘কেউ যদি ভাবেন, মানুষকে বোকা বানাতে হিংসার আশ্রয় নেবেন, তা হলে তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।’’ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, “মানবাধিকারের বিরোধী অপরাধীদের বিরুদ্ধে বাংলা একজোট হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংঘর্ষ পাকানো এবং প্ররোচনা সৃষ্টিকারীদের তা বোঝানো হবে।” পুলিশকে ইতিবাচক, শক্ত এবং ন্যায্য অবস্থানে থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল রাজভবন থেকে।