এখনও অধরা বাঘিনি জ়িনত। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র ।
লোভনীয় তিন খাবারের টোপ দিয়েও বাগে আনা যাচ্ছে না বাঘিনিকে। এখনও পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড় সংলগ্ন জঙ্গলেই গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে জ়িনত। মঙ্গলবার সকালে রেডিয়ো কলার ‘ট্র্যাক’ করে বাঘিনির গতিবিধি সংক্রান্ত এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে বন দফতরের একটি সূত্র।
বন দফতর মনে করছে, রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে পর্যাপ্ত খাবার পেয়ে গিয়েছে জ়িনত। তাই সেখান থেকে অন্যত্র সরছে না সে। তবে চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না বন দফতরের আধিকারিকেরা। জঙ্গলের তিন প্রান্তে ছাগল, মোষ এবং বুনো শূকর বেঁধে ফাঁদ পাতা হয়েছে। যদি পেটের টানে ধরা দেয় জ়িনত। তবে সেই পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত সফল হয়নি। খাবারের টোপ ভরে রাখা খাঁচা দূরস্থান, তার ধারেকাছেও দেখা যায়নি জ়িনতকে।
বিকল্প পরিকল্পনা হিসাবে ১২-১৫টি দলে বিভক্ত হয়ে জ়িনতের খোঁজে অপেক্ষা করছেন বনকর্মীরা। তবে বাঘিনির সন্ধান মেলেনি। বন দফতর সূত্রে খবর, প্রায় দেড় হাজার ফুট উঁচু পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে বেশ কয়েকটি গুহা রয়েছে। বন আধিকারিকদের একাংশের আশঙ্কা, জ়িনত যদি সেগুলির কোনও একটিতে লুকিয়ে পড়ে, তবে ইন্টারনেট সংযোগের অভাব এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত কারণে তার অবস্থান জানা মুশকিল হয়ে যাবে।
এই প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার বিভাগীয় বন আধিকারিক (ডিএফও) অঞ্জন গুহ বলেন, “বাঘিনি যে জায়গায় ছিল, সেখানেই রয়েছে। তাকে ওডিশায় ফেরানোর সব চেষ্টাই হচ্ছে। বন দফতর নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপও করছে। আতঙ্কের কারণ নেই।”
গত ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাড়োবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে তিন বছরের জ়িনতকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে (টাইগার রিজ়ার্ভ, সংক্ষেপে এসটিআর) আনা হয়েছিল। কয়েক দিন ঘেরাটোপে রেখে পর্যবেক্ষণের পরে রেডিয়ো কলার পরিয়ে ২৪ নভেম্বর তাকে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়। বন দফতর সূত্রে খবর, সেখান থেকেই ঝাড়খণ্ডের দিকে হাঁটা দেয় জ়িনত। সিমলিপাল থেকে গুরবান্দা হয়ে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছে গিয়েছিল সে। সেখানে জামশেদপুর বন বিভাগের চাকুলিয়া রেঞ্জের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছিল তাকে। এর পর চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবান্ধি এলাকা থেকে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার অন্তর্গত কটুচুয়ার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে জ়িনত। তার পর সেখান থেকে পুরুলিয়া।