পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসার কথা উল্লেখ করে ফিরহাদ হাকিমের নিশানায় যোগী আদিত্যনাথ। ফাইল চিত্র
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভায় বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসার কথার উল্লেখ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেই বিবৃতির পাল্টা যোগীকেই উত্তরপ্রদেশের গব্বর সিংহ বলে আক্রমণ করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শনিবার যোগীর বিবৃতির প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘‘যোগী আদিত্যনাথ জানেন না যে পশ্চিমবঙ্গ ভোট পরবর্তী হিংসার জায়গা নয়। বাংলা শান্তির বার্তা দেয়। বাংলায় যাঁরা স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব, তাঁরা বিশ্বজুড়ে সম্মানিত হন। এখনও বাংলা শান্তির পথে রয়েছে।’’ এরপরেই সুর চড়িয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘যোগী হচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের গব্বর সিংহ। ওখানে ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেন না। উত্তরপ্রদেশের গব্বর সিংহর জন্য সেই রাজ্যের বিরোধীদের দু’বছর জেলে কাটাতে হয়। ওখানে সাধারণ মানুষের যেমন কথা বলার অধিকার নেই। তেমনই নিজের রাজনৈতিক অবস্থান জানারও অধিকার নেই। সুতরাং ওঁর মুখে এসব মানায় না।’’
পরে যোগীকে পকেটমারের সঙ্গেও তুলনা করেছেন কলকাতার মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘বাস থেকে যখন পকেটমার পালায়, তখন নিজেই পকেটমার পকেটমার বলে চিৎকার করে পালায়। যোগীর অবস্থাও অনেকটাই সেরকমই। বাংলায় দিদি একটা সুশাসন স্থাপন করেছে। তাই বাংলায় ধর্মের ভিত্তিতে ভোট করাতে পারেনি ওরা। উন্নয়নের নিরিখে এখানে ভোট হয়েছে। মানুষ উজাড় করে ভোট দিয়েছেন। ওরা সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়েও পারেনি।’’
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি সংক্রান্ত অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ টেনে আনেন যোগী। বিধানসভায় মমতার নাম না করে তিনি বলেন, “এ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এক জন দিদি এসেছিলেন। যাঁর নিজের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক হিংসার সাক্ষী থেকেছে।” যোগী দাবি করেন, ওই রাজ্যের ‘২৪২টি আসনের মধ্যে’ (আসলে ২৯৪টি) ১৪২টি আসনে হিংসার ঘটনা ঘটেছে। হিংসার কারণে প্রভাবিত হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার বুথ। রাজনৈতিক হিংসার কারণে বিজেপির প্রায় দশ হাজার কর্মী শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। খুন হয়েছেন ৭৫ জন। এর পরেই উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তুলনা টেনে বলেন, “উত্তরপ্রদেশের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা অর্ধেক। রাজ্যের লোকসংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের আগে ও পরে কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলার এই হল উদাহরণ।”
যোগীর খোঁচার জবাবে পুরমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলার দিদির কাছে এসে কাজ শিখুন যোগী। ধর্মান্ধতার জিগির তুলে দেশটাকে পিছিয়ে দিচ্ছে ওরা। মধ্যযুগে নিয়ে চলে যাচ্ছে। তোমাদের মুখে বড় বড় কথা? এন্টাউন্টারে মানুষ মারো, পুলিশ মারো। দাঙ্গা করে ভয় দেখিয়ে মানুষকে চুপ করিয়ে রাখছ। কে কী খাবে সেটা তুমি ঠিক করে দেবে? কে কী পড়বে তুমি ঠিক করে দেবে? আর তুমি বাংলাকে বদনাম করছ।’’