Bengal Recruitment Case

পুর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে হঠাৎ তৎপর ইডি! ১২টি পুরসভার কাছ থেকে চাইল তথ্য, বেঁধে দিল সময়ও

স্কুলে নিয়োগ মামলার তদন্তে নেমে পুরসভার নিয়োগেও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। দেখা গিয়েছিল, যাঁদের নাম স্কুল নিয়োগের মামলায় উঠেছে, তাঁদের কাছেই রয়েছে পুর নিয়োগেরও ওএমআর শিট।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৩ ১২:৪৪

—প্রতীকী চিত্র।

নিয়োগ মামলা নিয়ে দু’দিন আগেই কলকাতা হাই কোর্টের অসন্তোষের মুখে পড়েছিল ইডি। বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘এত গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তদন্তের অগ্রগতি কোথায়? পঞ্চায়েত ভোটের সময় কিছুটা তাড়াহুড়ো দেখা গিয়েছিল। তার পর কি আবার ঘুমিয়ে পড়লেন?’’ মঙ্গলবার সেই প্রশ্ন শোনার ৪৮ ‌ঘণ্টার মধ্যয়েই পুর নিয়োগ মামলা নিয়ে তৎপরতা দেখা গেল। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারই রাজ্যের ১২টি পুরসভার কাছে গিয়েছে তদন্তকারী সংস্থাটির নোটিস। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ইডির দফতরে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে পুর নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত অয়ন শীলের হিসাবরক্ষককেও। অর্থাৎ পুরনিয়োগ নিয়ে এ বার কোমর বেঁধে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।

Advertisement

স্কুলে নিয়োগ মামলার তদন্তে নেমে পুরসভার নিয়োগেও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। দেখা গিয়েছিল, যাঁদের নাম স্কুল নিয়োগের মামলায় উঠে আসছে, তাঁদের কাছেই রয়েছে পুরসভার নিয়োগ পরীক্ষার দিস্তা দিস্তা ওএমআর শিট। কেউ পেশায় ব্যবসায়ী, কেউ এজেন্ট। এঁদের কাছে পুরসভার নিয়োগের ওএমআর শিট কী করে এল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হতেই ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসে একের পর এক তথ্য। দেখা যায় স্কুল নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে একই শৃঙ্খলে বাঁধা পুরনিয়োগে অনিয়মের ঘটনাও। দায়ের হয় মামলা। শুরু হয় তদন্ত। কিন্তু গত কয়েক মাসে সেই মামলার তদন্তে নতুন কোনও তথ্য পাওয়ার কথা জানায়নি ইডি। অবশেষে বৃহস্পতিবার আবার তাদের এ নিয়ে তৎপর হতে দেখা গেল।

ইডি সূত্রে খবর, যে ১২টি পুরসভার কাছে তারা নথি চেয়ে পাঠিয়েছে, তার মধ্যে দমদম, কামারহাটি, পানিহাটির মতো কলকাতা সংলগ্ন এলাকাগুলির পুরসভাও রয়েছে। ইডি ওই পুরসভা কর্তৃপক্ষকে বলেছে, গত ২০১৪ সাল থেকে সমস্ত নিয়োগের তথ্য পাঠাতে। এক সপ্তাহের মধ্যে ওই তথ্য এবং যাবতীয় নথি পাঠাতে হবে বলে নোটিসে জানিয়েছে ইডি।

অন্য দিকে, একই পুরনিয়োগের দুর্নীতিতে হুগলির যে নির্মাণ ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছিল, সেই অয়নের হিসাবরক্ষককেও সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তাঁকে দেখা যায় অয়নের আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে ইডির দফতরে পৌঁছতে। পরে অয়নের আইনজীবী জানান, অয়নের সংস্থা এবিএস ইনফোজন ‘মিউনিসিপ্যাল সিলেকশন প্রসেসর’ এর কাজ করেছিল। অর্থাৎ পুরসভার পরীক্ষায় যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তাদের বাছাই প্রক্রিয়ার কাজ করেছিল এবিএস ইনফোজন। তারই কিছু নথিপত্র জমা দেওয়ার ছিল ইডিকে। সেই নথিপত্র বৃহস্পতিবার জমা দেওয়া হল বলে জানান অয়ন শিলের আইনজীবী। অয়নের হিসাবরক্ষককেও নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, নিয়োগ মামলার তদন্তে এই অয়নের কাছ থেকেই পাওয়া গিয়েছিল পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত ওএমআর শিট। মিলেছিল একাধিক পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্রও। পরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অয়নের মালিকানাধীন একটি সংস্থা পুরসভার নিয়োগ পরীক্ষা পরিচালনার কাজও করত। ১২টি পুরসভা থেকে তথ্য পাওয়ার পর তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখবেন এঁরা নিয়োগের পরীক্ষার টেন্ডার কখনও অয়নের সংস্থাকে দিয়েছিলেন কি না।

আরও পড়ুন
Advertisement