Recruitment case

ফ্ল্যাট কিনতে ৬০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছেন সায়নী? কত দিয়েছেন নগদে? সব নথিপত্র দেখতে চায় ইডি

গল্ফগ্রিনে সায়নীদের দু’টি ফ্ল্যাট রয়েছে। তার একটির দাম ৮০ লক্ষ টাকা। নগদের পাশাপাশি, এই ফ্ল্যাট কেনার জন্য ঋণও নিয়েছেন তৃণমূলের যুবনেত্রী। ফ্ল্যাট সংক্রান্ত নথিপত্র দেখতে চেয়েছে ইডি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ১৩:৫৮
ED asked for flat documents from Actress cum TMC leader Saayoni Ghosh.

অভিনেত্রী তথা তৃণমূল যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। ফাইল চিত্র।

শুক্রবার ১১ ঘণ্টা জেরার পর অভিনেত্রী তথা তৃণমূল যুবনেত্রী সায়নী ঘোষকে আগামী বুধবার আবার তলব করেছে ইডি। সূত্রের খবর, সে দিন তাঁকে বেশ কিছু নথি নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সায়নীর ফ্ল্যাট সংক্রান্ত নথি দেখতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

ইডি সূত্রে খবর, সায়নীদের মোট দু’টি ফ্ল্যাট রয়েছে। একটি তাঁর নিজের নামে এবং একটি তাঁর মায়ের নামে। গল্ফগ্রিনে একই জায়গায় এই দু’টি ফ্ল্যাট তাঁদের। ফ্ল্যাটগুলির মধ্যে একটির দাম ৮০ লক্ষ টাকা। ওই ফ্ল্যাটটি কেনার সময় সায়নী ২০ লক্ষ টাকা নগদে দিয়েছিলেন। বাকি ৬০ লক্ষ টাকার জন্য ঋণ নিয়েছিলেন। বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ওই ঋণ নেওয়া হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে ইডি। ঋণের কাগজপত্র তাঁর কাছে দেখতে চাওয়া হয়েছে। ইডি সূত্রে দাবি, সায়নী দু’টি ফ্ল্যাটই কিনেছিলেন ২০২০-২১ সাল নাগাদ। ঘটনাচক্রে, তিনি ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেন।

Advertisement

ফ্ল্যাট ছাড়াও সায়নী একটি গাড়ি ব্যবহার করেন। যদিও যুবনেত্রী দাবি করেছেন, গাড়িটি তাঁর নিজের। তবে তার দিকেও নজর রেখেছে ইডি। সায়নী আর কোনও গাড়ি ব্যবহার করতেন কি না, নিয়োগ মামলায় ধৃত তৃণমূলের অপর যুব নেতা (অধুনা বহিষ্কৃত) কুন্তল ঘোষের সঙ্গে তাঁর কোনও অর্থনৈতিক লেনদেন হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কুন্তলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সায়নী গাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য খরচ করেছেন কি না, তদন্ত করে দেখছেন গোয়েন্দারা।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছিল, বর্তমানে জেলবন্দি কুন্তলের যোগসূত্র ধরেই নিয়োগকাণ্ডে সায়নীর নাম জড়িয়েছে। এর আগে কুন্তলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কুন্তলের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সায়নীর ছবি (সে ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও সায়নীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছিল, সায়নী বলেছেন, তাঁরা দু’জনে এক মঞ্চে থাকতেই পারেন কারণ তাঁরা একই রাজনৈতিক দলের সদস্য। নিয়োগ মামলায় নাম জড়ানোর পর কুন্তলকে দল বহিষ্কার করেছিল (সূত্রের খবর, সায়নী নিজেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তদ্বির করেছিলেন দলীয় নেতৃত্বের কাছে। পরে অবশ্য ঘনিষ্ঠ মহলে সায়নী সেই খবরকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়েও দিয়েছিলেন বলে শোনা যায়)।

সায়নী শনিবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, দল তাঁর পাশেই রয়েছে। আগামী দিনে দলের প্রচারেও তিনি যাবেন। উল্লেখ্য, শনিবার তৃণমূলের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারকারীদের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে সায়নীর নাম নেই। গত বুধবার পর্যন্ত এই তালিকায় তাঁর নাম ছিল। শুক্রবার ইডির তলবের কারণে প্রচারের তালিকায় তিনি ছিলেন না। শনিবারও তাঁকে তালিকায় রাখা হয়নি দেখে অনেকে মনে করছেন, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এমনিতেই খানিকটা ‘কোণঠাসা’ তৃণমূল। সায়নীকে ওই মামলাতেই জেরা করা হয়েছে। তাই তাঁকে আর পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে ব্যবহার করা না-ও হতে পারে। অবশ্য এই সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়েই শনিবার সকালে সায়নী বলেছেন, ‘‘দল আমার পাশেই আছে। আমি প্রচারেও যাব। মমতাদি আমার ফোনের ওয়ালপেপারে নেই, মনের ওয়ালপেপারে আছেন।’’

Advertisement
আরও পড়ুন