Buddhadeb Bhattacharjee

পাঁচ মাস পর বুদ্ধং স্মরণ‌ংয়ে তাঁরই তৈরি সংগঠন, এত দিন পরে কেন? তিন কারণ উল্লেখ সিপিএমের অন্দরে

১৯৬৮ সালের জুন মাসে তৈরি হয়েছিল ডিওয়াইএফ। যার সম্পাদক ছিলেন বুদ্ধদেব। পরে এই সংগঠনই ১৯৮০ সালে সর্বভারতীয় রূপ পায়। তৈরি হয় ডিওয়াইএফআই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৯
DYFI is going to hold a condolence meeting for Buddhadev Bhattacharya five months after his death

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। —ফাইল ছবি।

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রয়াত হয়েছিলেন গত বছর ৮ অগস্ট। পাঁচ মাস পর তাঁর স্মরণসভা করতে চলেছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। ঘটনাচক্রে, এই সংগঠন হাতে করে তৈরি করেছিলেন বুদ্ধদেব। তিনিই ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। ১৯৬৮ সালের জুন মাসে তৈরি হয়েছিল ডিওয়াইএফ। যার সম্পাদক ছিলেন বুদ্ধদেব। পরে এই সংগঠনই ১৯৮০ সালে সর্বভারতীয় রূপ পায়। তৈরি হয় ডিওয়াইএফআই। এত দিন পর কেন, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সংগঠনের অন্দরে। এ ব্যাপারে একান্ত আলোচনায় তিনটি কারণ উল্লেখ করছেন যুব নেতানেত্রীরা।

Advertisement

আগামী ২০ জানুয়ারি মৌলালি যুব কেন্দ্রে বুদ্ধদেবের স্মরণসভা করবে সিপিঅএমের যুব সংগঠন। সেই কর্মসূচির পোস্টারও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সমাজমাধ্যমে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘বিলম্বের’ কথা মানতে চাননি ডিওয়াইএফআই নেতৃত্ব। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা বলেন, ‘‘কোথায় দেরি? সব কিছুতে একই রকম ভাবনা কাজ করে না। এই স্মরণসভার জন্য আমাদের অনেক কিছু করতে হয়েছে। ওই দিনই দেখতে পাবেন।’’ ধ্রুব এ-ও জানিয়েছেন, বুদ্ধদেবের উপর একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করছে তাঁদের সংগঠন।

তবে সংগঠনের অন্দরে তিনটি কারণের কথা শোনা যাচ্ছে। এক, পুজোর পর পর্যন্ত আরজি কর আন্দোলন চলেছিল। তাই এই বিষয়ে মন দেওয়া যায়নি। দুই, সংগঠনের সদস্যপদ সংগ্রহের জন্য নভেম্বর-ডিসেম্বরে বাড়তি জোর দিয়েছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়েরা। সংগঠনের প্রাথমিক কাজের থেকে বুদ্ধদেবের সম্মরণসভাকে গুরুত্বের নিরিখে পিছনেই রাখা হয়েছিল। তিন, দলের এরিয়া স্তরের সম্মেলন চলছিল নভেম্বর-ডিসেম্বর জুড়ে। তার পর শুরু হয় জেলা স্তরের সম্মেলন। কলকাতা-সহ লাগোয়া জেলাগুলির সম্মেলন শেষের পরেই এই কর্মসূচির পরিকল্পনা করে দীনেশ মজুমদার ভবন (ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য দফতর)।

যদিও দ্বিতীয় কারণের কথা বলতে গিয়ে সিপিএমের যুবনেতাদের অনেকেই বলছেন, সেটি নিয়েও সংগঠনে ‘তর্ক’ রয়েছে। কারণ, ২০২৩ সালের নভেম্বরের গোড়া থেকেই কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত ‘ইনসাফ যাত্রা’ শুরু হয়েছিল। যার সমাপ্তি হয় ২০২৪ সালের জানুয়ারির গোড়ায়। তার পর ৭ জানুয়ারি ছিল ব্রিগেড সমাবেশ। তখন সদস্য সংগ্রহের বিষয় কারও মাথার মধ্যে ছিল না। সিপিএম সূত্রে খবর, এত দেরিতে কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য নেতৃত্বের একান্ত আলোচনাতেও।

বুদ্ধদেবের শেষযাত্রা ছিল ৯ অগস্ট। ঘটনাচক্রে, ওই দিন সকালেই আরজি কর হাসপাতালের অন্দরে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। আরজি কর পর্বে নাগরিক আন্দোলনের সঙ্গে মিশে থাকার কৌশল নিয়েছিল সিপিএম। যে কারণে, ঠিকঠাক করেও দলের তিন দিনের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন বাতিল করে দিয়েছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তবে সিপিএমের উদ্যোগে গত ২২ অগস্ট নেতজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বুদ্ধদেবের সম্মরণসভা হয়েছিল। পার্টি করতে পারলে যুব সংগঠনের কেন পাঁচ মাস লেগে গেল, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও এর আগে বুদ্ধদেবের বিভিন্ন লেখা এবং সাক্ষাৎকারকে এক জায়গায় করে একটি সংকলন প্রকাশ করেছিল ডিওয়াইএফআই।

Advertisement
আরও পড়ুন