সপ্তমীর সন্ধ্যায় বদলানো হয়েছে ওই অসুর মূর্তি। — নিজস্ব চিত্র।
বিতর্ক তুঙ্গে উঠতেই বদলে গিয়েছে দক্ষিণ কলকাতার রুবি পার্কের অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার দুর্গাপুজোর ‘অসুর’-এর চেহারা। সপ্তমীর রাতে চুল আর গোঁফ লাগিয়ে চেহারা বদলে দেয় পুলিশই। দাবি পুজো উদ্যোক্তাদের। এবং এই পরিবর্তন যে তাঁদের একেবারেই পছন্দ নয়, তা-ও জানাচ্ছেন পুজো কমিটির কর্তারা। এর প্রতিবাদে পুজোমণ্ডপের সামনেই অষ্টমীতে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন তাঁরা। জানিয়েছেন পুজোর মূল উদ্যোক্তা চন্দ্রচূড় গোস্বামী। বিষয়টি নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, আইনি পথেই তার মোকাবিলা করা হবে।
রবিবার থেকে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল রুবি পার্কের অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার দুর্গাপুজোর ছবি। তাতে দেখা গিয়েছে, ওই পুজোর দুর্গা প্রতিমার সঙ্গে যে অসুর মূর্তি রয়েছে তার টাকমাথা এবং চোখে চশমা। পাশাপাশি, মূর্তিটিকে পরানো হয়েছে সাদা ধুতিও। অভিযোগ উঠতে শুরু করে, ওই পুজোয় যে অসুর মূর্তি তৈরি করা হয়েছে তার সঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর চেহারার দারুণ মিল রয়েছে। এই অসুর মূর্তি ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। চন্দ্রচূড়ের দাবি, এর পর রবিবার অর্থাৎ সপ্তমীর সন্ধ্যায় পুলিশ গিয়ে ‘জোর করে’ বদলে দিয়েছে অসুরের মূর্তি। ওই অসুর মূর্তির মাথায় পরানো হয়ছে চুল। পরানো হয় গোঁফও। চশমাও খুলে নেওয়া হয়। অর্থাৎ ওই অসুর পুজোর শুরু থেকে যা ছিল, সপ্তমীর সন্ধ্যায় তা বদলে গিয়েছে বিলকুল।
চন্দ্রচূড়ের দাবি, ‘‘সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ কসবা থানার পুলিশ এসে জোর করে অসুরের মূর্তিতে চুল লাগিয়ে দিয়েছে। না হলে পুজো বিসর্জন দিয়ে দিতে হবে বলে পুলিশ আমাদের জানিয়েছিল। ওঁদের উপর নাকি কেন্দ্র থেকে প্রচুর চাপ দেওয়া হচ্ছে। লালবাজারেও নাকি চাপ দেওয়া হয়েছে। আমার কাছেও ফোন এসেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে। ফোনে বলা হয়েছে, ‘গান্ধীর ব্যাপারে এ সব বিতর্ক করাই যাবে না।’ বলা হয়েছে, আমি গ্রেফতার পর্যন্ত হতে পারি। আমি ওঁদের পাল্টা বলেছি, গ্রেফতার হলে হব। আমি সত্যি কথা বলতে ভয় পাই না।’’ নিজের অবস্থানে অনড় থেকে চন্দ্রচূড় বললেন, ‘‘মূর্তি বদলের প্রতিবাদে আমরা অবস্থান বিক্ষোভ করছি পুজোমণ্ডপেই।’’