শর্তসাপেক্ষে মাসে এক দিন দুয়ারে রেশন কর্মসূচিতে সায় দিলেন রেশন ডিলারদের একাংশ। সোমবার এই মর্মে নিজেদের শর্তের কথা জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে রেশন ডিলারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন। সেই স্মারকলিপিতে ১৬ দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবিপত্রের শেষাংশে লেখা হয়েছে, ‘মৌখিক নির্দেশানুযায়ী মাসে একটি করে ক্লাস্টারের মাধ্যমে রেশন বিলিতে অংশ নিতে পারব।’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, সরকার যদি তাঁদের শর্তে রাজি থাকেন, তা হলে তাঁরাও মাসে এক দিন করে দুয়ারে রেশন প্রকল্পে অংশ নিতে রাজি। রেশন ডিলারদের সংগঠনের এমন প্রস্তাব প্রসঙ্গে যদিও খাদ্য দফতর এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি বলেই খবর।
তবে রেশন ডিলারদের একাংশের মামলার ভিত্তিতেই দুয়ারে রেশন প্রকল্প খাদ্যের অধিকার আইনের পরিপন্থী, তাই বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। গত ২৮ নভেম্বর কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সদ্যসমাপ্ত বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘মানুষের জন্য দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু হয়েছিল। মানুষের স্বার্থেই দুয়ারে রেশন চলবে। সরকার কারও গায়ের জোরের কাছে মাথা নত করবে না।’’ তিনি এ-ও বলেছিলেন, ‘‘দরকারে বিধানসভার মাধ্যমে কোর্টকে আবেদন করব। যাতে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে না কাঁদে।’’
২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প শুরু করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে বিধানসভায় বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসার পরই মমতা ঘোষণা করেন, এখন থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে। সেই থেকে শুরু হয় এই প্রকল্প। এই প্রকল্পের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করেন রেশন ডিলারদের একাংশ। সেই মামলাতেই এই প্রকল্পের আইনি বৈধতা নেই বলে জানিয়েছিল হাই কোর্ট। তবে সোমবার শীর্ষ আদালত সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দিল। যার ফলে আপাতত স্বস্তিতে রাজ্য সরকার। আর তাতেই নিজেদের সুর নরম করেছেন রাজ্যের রেশন ডিলারদের একাংশ।