মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা এবং সুর করা গান নিয়ে একটি পুরোদস্তুর ‘কনসার্ট’ হতে চলেছে কলকাতায়। আগামী ১২ জানুয়ারি, রবিবার কসবার রাজডাঙা খেলার মাঠে সূচনা হবে পিঠেপুলি উৎসবের। শুরুর দিনেই মমতার লেখা এবং সুর করা ৩২টি গান নিয়ে ওই কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজক ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ।
মুখ্যমন্ত্রীর লেখা এবং সুর করা গানের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তার থেকে ৩২টি বাছাই গান গাওয়া হবে কনসার্টে। ইন্দ্রনীল সেন, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোময় ভট্টাচার্যের মতো শিল্পীরা গাইবেন। ঘটনাচক্রে, ইন্দ্রনীলও রাজ্যের মন্ত্রী। তিনি থাকেনও ওই রাজডাঙা এলাকাতেই। সুশান্তের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অনেক গান গোল্ডেন ডিস্ক পেয়েছে। সেগুলি নিয়েই কনসার্ট করার পরিকল্পনা করেছি।’’ উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে রাজডাঙা উৎসবকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন সুশান্ত। পাঁচ দিন ধরে চলে সেই উৎসব। প্রচুর লোকজনও আসেন। এ বার তাতে ‘নতুন মাত্রা’ যোগ করতে চলেছে মমতার লেখা এবং সুর করা গানের কনসার্ট।
বস্তুত, গত কয়েক বছর ধরেই পুজোয় মমতার লেখা এবং সুর করা গান ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। এ বার দেখা গিয়েছে শুধু দুর্গাপুজো নয়, কালীপুজো, ভাইফোঁটা এবং বড়দিনের মতো উৎসব-অনুষ্ঠানের জন্য মমতা আলাদা আলাদা করে গান লিখে সুর করেছেন। যার সাম্প্রতিকতমটি হল বড়দিন উপলক্ষে লেখা এবং সুর করা গান। গত ১৯ ডিসেম্বর পার্ক স্ট্রিটের লাগোয়া অ্যালেন পার্কে ক্রিসমাস উৎসবের সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই মঞ্চ থেকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সব অনুষ্ঠানেই আমি গান লিখি। তাই ভাবলাম বড়দিন কেন বাকি থাকবে! দু’দিন আগে হাঁটতে হাঁটতে গানটা আমি লিখেছি।’’ তবে গান লিখে এবং সুর করলেই তো আর হবে না। তাকে ‘পূর্ণাঙ্গ’ রূপ দিতে হবে। সেই রূপ পূর্ণ হবে যদি সেটি গাওয়া হয় এবং শ্রোতারা তা শোনেন। বড়দিনের গানটির সেই দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী সঁপে দিয়েছিলেন ইন্দ্রনীলেরই চওড়া কাঁধে। তার পরে ইন্দ্রনীল শ্রীরাধাকে দিয়ে সেই গান রেকর্ড করান। অ্যালেন পার্কের মঞ্চে সেই গান বাজানোও হয় সে দিন। এর আগে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পুজো বলে খ্যাত সুরুচি সঙ্ঘের থিম সং লিখে এবং তার সুর করে দিয়েছিলেন মমতা। সেই গানটি গেয়েছিলেন শ্রেয়া ঘোষাল। যে গান পুজোর সময়ে অনেক তৃণমূল নেতা নিজেদের মোবাইল ফোনের ‘কলারটিউন’ হিসেবেও রাখেন।
রাজডাঙা পড়ে কলকাতা পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে। সুশান্ত আগে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। গত বার ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ার ফলে তাঁকে ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। সুশান্তের বাড়িও রাজডাঙা এলাকায়। মাস দেড়েক আগে বাড়ির সামনেই সুশান্তকে খুন করার চেষ্টার একটি ঘটনা ঘটেছিল। তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল শাসকদল এবং প্রশাসনের মধ্যে। তবে আগন্তুক ধরাও পড়েছিল। কিন্তু ঘটনার পিছনে কারা ছিল, তা ঠিকঠাক এখনও স্পষ্ট হয়নি।