মালদহে ভাঙান দুর্গতি এলাকায় মহ. সেলিম, বিকাশ ভট্টাচার্য, নৌসাদ সিদ্দিকী প্রমুখ। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটের আগে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেকিউলার ফ্রন্টকে (আইএসএফ) নিয়ে তৈরি হয়েছিল সংযুক্ত মোর্চা। নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে মোর্চার ডাকে কোনও কর্মসূচি আর হয়নি। তবে সেই মোর্চাকে ঘিরে বামফ্রন্টের অন্দরে অস্বস্তি অব্যাহত। বামফ্রন্টে থাকলেও মোর্চার নামে কোনও কর্মসূচিতে তারা অংশগ্রহণ করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। তাদের আপত্তি মূলত আইএসএফ-কে নিয়ে। কংগ্রেস আগেই আইএসএফের সঙ্গে দূরত্বের কথা জানিয়ে রেখেছে। বকেয়া নির্বাচন ও উপনির্বাচন মিলে রাজ্যে ৭টি কেন্দ্রে ভোট হলে আদৌ সংযুক্ত মোর্চার নামে লড়াই হবে কি না, সেই প্রশ্নে জটিলতা তাই বেড়েই চলেছে।
ফ ব-র রাজ্য কমিটির বৈঠকে আলোচনায় ঠিক হয়েছে, তারা শুধু বামফ্রন্টেরই শরিক। দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি ফ্রন্টের কর্মসূচি তারা পালন করবে। কিন্তু মোর্চার নামে কোনও আন্দোলন বা কর্মসূচিতে তারা যাবে না। ফ ব-র রাজ্য নেতৃত্ব যখন এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম ও রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে একটি প্রতিনিধিদলের হয়ে তখন মালদহের ভূতনির চরে ভাঙন দুর্গত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছেন আইএসএফের চেয়ারম্যান ও বিধায়ক নওসাদউদ্দিন সিদ্দিকী। বাম শরিকদের একাংশের সঙ্গে সিপিএমের অবস্থান যে সব ক্ষেত্রে মিলছে না, এই ঘটনায় ফের তার ইঙ্গিত মিলছে।
নির্বাচনী পর্যালোচনা করতে গিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি বলেছে, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে একজোট করার প্রচেষ্টা হিসেবে কংগ্রেস এবং আইএসএফের সঙ্গে জোট বেঁধে সংযুক্ত মোর্চা গঠন দলের রাজনৈতিক লাইন মেনেই হয়েছিল। তবে ওই মোর্চা নির্বাচনী আঁতাঁত শুধু, স্থায়ী রাজনৈতিক ফ্রন্ট বামফ্রন্টই। সংযুক্ত মোর্চাকে স্থায়ী রাজনৈতিক ফ্রন্ট হিসেবে তুলে ধরা ঠিক নয়। এমতাবস্থায় রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বের অবস্থান, তাঁরা আগ বাড়িয়ে জোট ভাঙবেন না। ফ ব-র সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে ফের ফ্রন্টে আলোচনা হতে পারে।
আইএসএফের নওসাদের মত, ভোটেক আগে বামেদের সঙ্গে সমঝোতায় তাঁদের কোনও সমস্যা ছিল না। এখন বাম শিবিরের মধ্যে ভিন্ন সুর দেখা গেলে তার নিষ্পত্তি বামফ্রন্টকেই করতে হবে। তাঁরা আগাম কোনও পদক্ষেপ করছেন না। অন্য দিকে, বামেদের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘সিপিএম তো কোথাও বলেনি জোট ভেঙে দেওয়া হল! আমরাও তেমন কিছু বলিনি। তাই জোট তো আছে!’’ কংগ্রেস হাইকম্যান্ড শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের সঙ্গে জোটের সিদ্ধান্ত নিলে বাম-কংগ্রেস জোটের পরিণতি কী হবে, তা নিয়ে অবশ্য জল্পনা রয়েছেই।
ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সোমবারই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে এসএসকে এবং চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সমস্যার সমাধান করতে তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের আইএসএল-এ খেলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে হস্তক্ষেপ করছেন, তাকে স্বাগত জানিয়ে শিক্ষকদের সমস্যা মেটাতেও তাঁকে সক্রিয় হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন নওসাদ।