(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
আরজি কর-কাণ্ডে ঘটনায় এ বার পাল্টা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ধর্মতলার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে একযোগ সিবিআইকে আক্রমণ শানালেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘৯ তারিখে পুলিশ ডেডবডি পেয়েছে। ১০ তারিখে শেষকৃত্য হয়েছে। সারা রাত জেগে পুলিশ কাজ করেছে। ১১ তারিখ কাজ ছিল বলে ১২ তারিখে সকালে তাদের বাড়ি গিয়েছি। তার বাবা-মাকে বলেছি, বলুন আপনারা কী বলতে চান? আপনারা আমাদের কাছে কী কী চান? আপনাদের কী কী দাবি? আমি পুলিশ কমিশনারকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলাম। তার আগে যে কেসটা দেখছেন পুলিশ সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে পুলিশ রিপোর্ট তার বাবা-মাকে দেখিয়ে এসেছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আজ ক’দিন হল? কোথায় গেল বিচার? বিচার চাইতে হবে? বলতে হবে, বিচার চাই, বিচার চাই, জবাব দাও সিবিআই। ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, জবাব দাও সিবিআই।’’
মমতার সংযোজন, ‘‘আমি শুধু বলেছিলাম, আজকে সোমবার। আমাকে শনিবার পর্যন্ত সময় দিন। পাঁচ দিন। কিন্তু মঙ্গলবারের মধ্যে সিবিআই হয়ে গেল। মানে ওরা বিচার চায় না, কেসটাকে জলে ফেলে দিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ধর্ষণ রুখতে কড়া আইন আনতে পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ কঠিন আইন তৈরি করে সিবিআই ও ইডিকে দিয়ে বিরোধীদের জব্দ করার চেষ্টা করছে।’’
একই সুরে আক্রমণ করেন অভিষেকও। তিনি বলেন, ‘‘চার দিন কলকাতা পুলিশের হাতে কেস ছিল। ১০-১১-১২-১৩ তারিখ পর্যন্ত। ১৪ তারিখ মহামান্য কলকাতা হাই কোর্ট সিবিআইয়ের কাছে কেস ট্রান্সফার করে। আজ নয় নয় করে ১৪ দিন অতিক্রান্ত। যারা সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির দাবি তুলছিল, কেন ১৪ দিন এই খুন আর ধর্ষণের মামলায় সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হয়নি সিবিআই জবাব দিক। সিবিআইকে এর জবাব দিতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘৯ তারিখ ঘটনা ঘটেছে। আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ১০ তারিখ বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, এই কেস যদি চায় সিবিআই নিতে পারে। আমরা চাই বিচার হোক, সুবিচার হোক। আজকে ১৪ দিন সিবিআই তদন্ত করছে। ১০ বছর হয়ে গেল সারদা কাণ্ডের, এখনও চার্জশিট জমা পড়েনি। ট্রায়াল শুরু হওয়া তো দূরের কথা। যত তদন্ত হচ্ছে, নোবেল তদন্ত থেকে শুরু করে, জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে, যত তদন্ত হয়েছে তার একটিরও সুরাহা করতে পারেনি।’’
সিবিআই-ইডির হাতে তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতারির প্রসঙ্গও টেনে অভিষেক বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে আগের শিক্ষামন্ত্রী জেলে আছেন। আগে সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, আমাদের দলের মহাসচিব ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনিও দু’বছর ধরে জেলে। কী বিচার হয়েছে?’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘বিচার ব্যবস্থার একাংশকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি ইডি সিবিআইকে দিয়ে বাংলাকে কলুষিত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনও বিচার হয়নি। বিচার তখনই হবে, যবে আইন আসবে। ধর্ষণ বিরোধী আইন যদি কেন্দ্রের সরকার আগামী দু’-চার মাসের মধ্যে না আনে, তা হলে দিল্লিতে তৃণমূল বৃহত্তর আন্দোলন করবে। আইনের দাবিতে আমরা দলগত ভাবে চিঠি লিখব কেন্দ্রীয় সরকারকে।’’