Niranjan Jyoti

সময় দিয়েও মোদীর মন্ত্রী কেন শুনলেন না তৃণমূলের কথা? অভিষেককে দুষে জবাব নিরঞ্জন জ্যোতির

মঙ্গলবার দিল্লিতে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি কেন দেখা করেননি? তার জবাব দিতে তিনি অপেক্ষা করেছিলেন বলে জানান কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:০৬
Central Minister Niranjan Jyoti attacks TMC

নিরঞ্জন জ্যোতি। —ফাইল চিত্র।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করবেন বলে সময়ও দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতি। কিন্তু তিনি দেখা করেননি। এর পরে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের বাকিরা দফতরেই বসে থাকেন। শেষে দিল্লি পুলিশ সকলকে আটক করে। কেন এমন করলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন? বুধবার সেই সব প্রশ্নের জবাব দিলেন নিরঞ্জন। দেখা করায় কেন আপত্তি তা জানানোর পাশাপাশি অভিষেককে আক্রমণও করেছেন তিনি। নিরঞ্জন বলেন, ‘‘অভিষেককে বাঁচাতেই ১০০ দিনের কাজের দুর্নীতির তদন্ত করেনি বাংলার সরকার।’’

Advertisement

মঙ্গলবার দিল্লিতে যন্তর মন্তরের কর্মসূচি শেষে নিরঞ্জনের সঙ্গে দেখা করার জন্য কথা ছিল তৃণমূল প্রতিনিধি দলের। সেই অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে পায়ে হেঁটে দিল্লির কৃষি ভবনে পৌঁছয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সঙ্গে ছিল ভুক্তভোগীদের আট জন। কৃষি ভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা না করায় কৃষি ভবনেই অবস্থান শুরু করে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। রাত্রি ৯টা নাগাদ কৃষি ভবনে অবস্থানরত তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে জোর করে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে দিল্লি পুলিশ। শুরু হয় তুমুল ধস্তাধস্তি। প্রায় দু’ঘণ্টা পর রাত ১১টা নাগাদ ছেড়ে দেওয়া হয় তৃণমূল নেতৃত্বকে।

কেন সময় দিয়েও তিনি দেখা করলেন না, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নিরঞ্জন বলেন, “আমি যেটা জানতাম, তাতে তৃণমূলের সাংসদ ও মন্ত্রীরা আমার সঙ্গে ৬টার সময়ে দেখা করতে আসবেন। সে জন্যই সময় নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরে তৃণমূলের কর্মীদের সাধারণ জনতার দাবিতে তাঁদের নিয়ে ওঁরা দেখা করতে চাইছিলেন। যা অফিসের নিয়মবিরুদ্ধ।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, আসল বিষয় নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্য তৃণমূলের ছিল না। ওঁদের উদ্দেশ্য ছিল রাজনীতি করা। এ ঘটনা অত্যন্ত লজ্জার।

মঙ্গলবার রাতেই নিরঞ্জন বলেছিলেন, “আজ আড়াই ঘণ্টা সময় নষ্ট হল। তৃণমূলের সাংসদদের জন্য অপেক্ষা করে করে শেষমেশ সাড়ে ৮টার সময়ে অফিস থেকে বেরিয়েছি।’’ বুধবার তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে পাঁচ জন, তারপর ১০ জন সাক্ষাৎ করতে চান। তার পর বাংলা থেকে আসা ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করার কথা বলা হয়। আমি তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তাব দিই, তাঁরা রাজি হননি।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মোদী সরকার বাংলার প্রাপ্য আটকে রাখেনি। তথ্য দিতে চাইছিলাম বলে পালিয়েছেন তৃণমূল সাংসদেরাই। বার বার দুর্নীতির অভিযোগে রিপোর্ট তলব করেও জবাব মেলেনি। দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করার জন্যই টাকা আটকানো হয়েছে।’’ কংগ্রেস জমানার তুলনায় মোদী সরকার বাংলাকে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাবদ বেশি অর্থ দিয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।

নিরঞ্জনের দাবির পাল্টা প্রতিক্রিয়া মঙ্গলবারই দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “একশো দিনের কাজে যাঁরা মজুরি পাননি সেই সব মানুষকে নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু প্রান্তিক গরিব মানুষগুলোর চোখে চোখ রেখে মিথ্যা বলতে পারেননি মোদীর মন্ত্রী।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মঙ্গলবারের ঘটনার নিন্দা করেছেন। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘‘বাংলার জনগণের প্রতি বিজেপির ঘৃণা, দরিদ্রদের অধিকারের প্রতি তাদের অবজ্ঞা প্রকাশ পেয়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement
আরও পড়ুন