(বাঁ দিক থেকে) সৃজিত মুখোপাধ্যায়, চঞ্চল চৌধুরী এবং মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত।
বিগত কয়েক বছরে ওটিটির গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে অতিমারির পর জাতীয় এবং আঞ্চলিক স্তরে সিনেমাকে রীতিমতো টক্কর দিচ্ছে বিভিন্ন ওটিটি মাধ্যম। ভারতের বাঙালি দর্শকের ওয়াচলিস্টে এখন বাংলাদেশের কনটেন্টও জায়গা করে নিয়েছে। এ পার বাংলার দর্শক এখন মুখিয়ে থাকেন ও পার বাংলার চঞ্চল চৌধুরী, মোশারফ করিম বা জয়া আহসানের অভিনয় দেখতে। বিষয়টা মাথায় রেখেই বাংলাদেশের প্রথম সারির ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘চরকি’ এ বার পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে পা রাখতে চলেছে। বুধবার তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। তার আগেই সংশ্লিষ্ট ওটিটি মাধ্যমের চিফ এগ্জ়িকিউটিভ অফিসার রেদওয়ান রনি কথা বললেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে।
২০২১ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে ‘চরকি’। তার পর এ পার বাংলায় পা রাখার কারণ কী? রনি বললেন, ‘‘আমরা বাংলা কনটেন্ট নিয়েই কাজ করি। শুরুটা করেছিলাম ঢাকা থেকে। তার পর দু’বাংলার প্রতিভা নিয়ে কাজের ইচ্ছা ছিলই।’’ এ রাজ্যে ‘চরকি’র যাত্রা শুরুর পর সাবস্ক্রিপশন পদ্ধতি আরও সহজ হয়ে যাবে বলে জানালেন রনি।
‘চরকি’তে ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’, ‘সুড়ঙ্গ’-এর মতো ছবি বা ‘শাটিকাপ’, ‘সিন্ডিকেট’, ‘ঊনলৌকিক’ এবং ‘মাই শেলফ অ্যালেন স্বপন’-এর মতো ওয়েব সিরিজ় নিয়ে দর্শকদের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি এখানে তাঁরা কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করবেন, তা খোলসা করলেন রনি। জানালেন, টলিপাড়ার অভিনেতা এবং পরিচালকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র কনটেন্ট যেমন তাঁরা তৈরি করবেন, তেমনই দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী তাঁরা। যেমন অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘৭২ ঘণ্টা’ ছবিটি এই মাধ্যমেই দেখা যায়। সূত্রের খবর, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং কিউ-এর মতো টলিপাড়ার প্রথম সারির পরিচালকদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই ‘চরকি’র তরফে কথাবার্তা চলছে। তবে এই প্রসঙ্গে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না রনি। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণত আমরা বছরের শেষে কনটেন্ট ঘোষণা করি। আগে সব চূড়ান্ত হলে পুজোর পর কলকাতার কনটেন্ট ঘোষণা করার ইচ্ছা রয়েছে।’’
কয়েক মাস আগেই ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ শিরোনামের অধীনে ১২টি ছবির ঘোষণা করে ‘চরকি’। এর মধ্যে পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর দু’টি ছবি ‘মনোগামী’ এবং ‘অটোবায়োগ্রাফি’ রয়েছে। একই ভাবে এ পার বাংলার পরিচালকদের নিয়েও ছবি তৈরির ইচ্ছে রয়েছে তাদের। সূত্রের খবর, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁদের নাকি কথাবার্তা চলছে।
বাংলায় ‘হইচই’-এর কনটেন্টের প্রাধান্য বেশি। ইতিমধ্যেই তারা বাংলাদেশে শাখা বিস্তার করেছে। এ পার বাংলায় পা রেখে ‘বিরোধী’ মাধ্যমের সঙ্গে কোনও রকম প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিলেন রনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা একে অপরকে চিনি। আমাদের দেশে ইদে ওদের এবং আমাদের কোনও কনটেন্ট জনপ্রিয় হলে দু’জনেই লাভবান হয়। আমরা একসঙ্গে বাংলার সামগ্রিক বাজারটা বড় করতে ইচ্ছুক।’’ ‘চরকি’ এখন বাংলার দর্শকদের মনে কতটা জায়গা করে নেয়, সেটাই দেখার।