আরজি করের সামনে পুলিশের বেষ্টনী। ছবি: পিটিআই।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের পলিগ্রাফ পরীক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ কোর্টে আবেদন জানাল সিবিআই। এ দিন বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ আদালত চত্বরে দেখা যায় সন্দীপকে। ঘণ্টা দুয়েক বাদে কেন্দ্রীয় সংস্থার গোয়েন্দাদের সঙ্গে বেরিয়ে যান তিনি। শিয়ালদহ কোর্ট চত্বরে ছিল ভিড়। সন্দীপকে নিয়ে সিবিআইয়ের গাড়ি বেরোনোর সময়েও স্লোগান ওঠে, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’!
সূত্রের খবর, নিহতের ঘনিষ্ঠ চার জন সহপাঠী এবং ধৃত সঞ্জয় রায়ের ঘনিষ্ঠ জনৈক সিভিক ভলান্টিয়ারের পলিগ্রাফ পরীক্ষার জন্য এ দিন আর্জি জানানো হয়। খুন, ধর্ষণের পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও পারিপার্শ্বিক প্রমাণের সঙ্গে কয়েক জনের বয়ান মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তার গরমিল দূর করতেই পলিগ্রাফ পরীক্ষা জরুরি, মনে করছেন গোয়েন্দারা। তবে যাঁদের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানো হবে, তাঁদের শারীরিক অবস্থা ওই পরীক্ষার উপযুক্ত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখে আদালত। সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন গৃহীত হয়েছে। আজ, শুক্রবার তাকে পলিগ্রাফ সংক্রান্ত শুনানির জন্য শিয়ালদহ কোর্টে হাজির করানো হবে।
কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়ের ‘গুরুদেব’ বলে পরিচিত এএসআই অনুপ দত্তকে এ দিনও সিবিআই দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করে। টালা থানার অফিসারেরা আর জি করে চিকিৎসক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছিলেন। সিবিআই সূত্রের খবর, পরের সকাল থেকে ২০-২৫ জন নিচুতলার পুলিশ আধিকারিক বার বার টালা থানার পুলিশ অফিসার ও হাসপাতালের কর্তাদের ফোন করেছেন। তাঁরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আর জি করে ছিলেন। চেস্ট মেডিসিন বিভাগে ঢুকেছিলেন, সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের সময়েও হাজির ছিলেন। মৃতদেহের শেষকৃত্য পর্যন্ত ওই অফিসারদের ‘অতি সক্রিয়’ ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বলে দাবি।
সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, “বড় কোনও ঘটনায় বাড়তি পুলিশ পাঠানো হয়। আইন-শৃঙ্খলা ও নানা রকম পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বড় কর্তারা অন্য থানার অফিসার বা রিজার্ভ ফোর্সের অফিসারদের পাঠান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অন্য রকম ঠেকছে। কিছু পুলিশকর্মীকে কেন দরকার হচ্ছিল, তা পরিষ্কার হওয়া জরুরি।” ওই পুলিশকর্মীদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশ বা স্বাস্থ্য দফতরের কোনও কোনও আধিকারিকের কথার সূত্র মিলেছে, খবর সিবিআই সূত্রের। তদন্তকারীরা জানান, ওই সব পুলিশকর্মীর নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের তলব করা হবে। কারা, কেন ওই পুলিশকর্মীদের আর জি করে যেতে বলেছিলেন, তা জানা তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।