R G Kar Medical College And Hospital Incident

প্রকৃত সত্য নিয়ে নানা প্রশ্ন, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের মতো সন্দীপেরও কি পলিগ্রাফ পরীক্ষা?

মিথ্যা যাচাইয়ের এই পরীক্ষা করাতে আদালতের ছাড়পত্র লাগে। ইতিমধ্যে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি শিয়ালদহ আদালতে আবেদন করেছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৪৩
Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আরজি করে ডাক্তার ছাত্রীর খুন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রকৃত সত্য নিয়ে নানা প্রশ্ন তো আছেই! সেই সঙ্গে হাসপাতালের কর্তাব্যক্তিদের ‘কর্তব্যে গাফিলতি’ এবং তা ‘আড়াল করার চেষ্টা’র অভিযোগ নিয়েও নানা তথ্য সামনে আসছে তদন্তকারীদের। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ যা বলছেন, তার গরমিল খুঁজে বের করতে পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানোর কথাও ভাবছে সিবিআই।

Advertisement

তবে মিথ্যা যাচাইয়ের এই পরীক্ষা করাতে আদালতের ছাড়পত্র লাগে। ইতিমধ্যে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি শিয়ালদহ আদালতে আবেদন করেছে। এ দিন আদালত তা মঞ্জুর করে। সন্দীপের ক্ষেত্রেও একই পথ নিতে পারে সিবিআই। পাশাপাশি ঘটনার দিনে ধৃতের মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশনও লালবাজারের কাছে চেয়েছে সিবিআই।

তদন্তকারীদের ধারণা, নির্যাতিতাকে ওই রাতে খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে বা অন্য ভাবে সংজ্ঞাহীন করাও হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে খটকা, ময়না তদন্তের রিপোর্টে কোনও বিষক্রিয়া ধরা পড়েনি। শুধু পাকস্থলীতে কতটা খাবার ছিল, তা বলা হয়েছে। সিবিআই-এর তদন্তকারী দলের সদস্য এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘‘নানা কারণেই ময়না তদন্তের রিপোর্ট ত্রুটিপূর্ণ লাগছে। দ্বিতীয় বার ময়না তদন্ত করানো অত্যন্ত জরুরি ছিল।’’ সুরতহাল এবং ময়না তদন্তের রিপোর্ট উচ্চ আদালতে পেশ করা হবে বলেও জানিয়েছে সিবিআই। তদন্তকারীদের মতে, এই খুন, ধর্ষণে শেষ পর্যন্ত পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের সূত্রই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

আরজি করের কর্তাব্যক্তিদের একাংশ অনেক কিছু গোপন করার চেষ্টা করছেন বলেও সিবিআই-এর তদন্তকারীরা মনে করছেন। প্রাক্তন অধ্যক্ষের সঙ্গে টানা জিজ্ঞাসাবাদে তেমনই মনে হচ্ছে বলে তাঁরা জানাচ্ছেন।

গত কয়েক দিনের মতো সোমবারও সন্দীপকে ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের ধারা জারি রয়েছে। রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি সিজিও কমপ্লেক্স ছেড়ে বেরিয়ে যান। সিবিআই-এর তদন্তকারীদের সূত্র বলছে, তরুণী ডাক্তার ছাত্রীর মৃত্যুর পরে তিনি কী কী নির্দেশ দেন এবং পদক্ষেপ করেন— সে প্রসঙ্গে সন্দীপের বয়ানে নানা অসঙ্গতি চোখে পড়ছে। তদন্ত চলাকালীন সেমিনার কক্ষের লাগোয়া অংশ কেন ভেঙে আচমকাই মেরামতি শুরু হল— সে বিষয়েও সন্দীপের জবাব সন্তোষজনক নয়। তদন্তকারীরা বলছেন, সন্দীপ এক-এক বার এক-এক রকম জবাব দিচ্ছেন। কখনও বলছেন, কী হয়েছিল, ভাল করে মনে পড়ছে না। এ সব কারণেই সন্দীপেরও পলিগ্রাফ টেস্ট নির্ভরযোগ্য বলে তদন্তকারী দলের একাংশ মনে করছে।

তদন্তকারীদের আরও দাবি, ওই রাতে কর্তব্যরত সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসক নার্স এবং নিরাপত্তা কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও কিছু পরস্পরবিরোধী তথ্য উঠে আসছে। জুনিয়র ও সিনিয়র চিকিৎসক-সহ অন্য আধিকারিক নার্স এবং নিরাপত্তারক্ষীদের মোবাইলের তখনকার নথি সংগ্রহ করাও জরুরি বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন।

সিবিআই-এর তদন্তকারী অফিসারেরা এ দিন মৃতার বাড়িতে গিয়ে তাঁর মা-বাবার সঙ্গেও কথা বলেছেন। ওই চিকিৎসকের ঘনিষ্ঠ চার ডাক্তারকে রবিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তাঁদের বয়ানের ভিত্তিতেই মৃতার মা-বাবার কাছে কয়েকটি বিষয় যাচাই করা হয় বলে সিবিআই সূত্রে খবর। আরজি কর হাসপাতালের ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ এ দিনও থ্রিডি স্ক্যানারের মাধ্যমে ম্যাপিং ও ভিডিয়ো করে সিবিআই। ভাঙচুরের ঘটনায় ধৃতদের বিষয়ে রিপোর্টও আদালত থেকে সংগ্রহ করা হয়। পাশাপাশি, ঘটনার দিন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার কলকাতায় ঘোরাঘুরির ফুটেজও লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগের সিসি ক্যামেরা থেকে সিবিআই সংগ্রহ করেছে।

আরও পড়ুন
Advertisement