Calcutta High Court

পার্থদের মামলায় ‘শেষ বার’ মুখ্যসচিবের মতামত তলব হাই কোর্টের! না জানালে ‘জারি হবে অবমাননা রুল’

নিয়োগ মামলায় জামিন চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরা। ওই জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই জানায়, রাজ্যের মুখ্যসচিবের অনুমতি না মেলায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:২২
Calcutta High Court set dateline for chief secretary of West Bengal on Recruitment case

(বাঁ দিকে) পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক। — ফাইল চিত্র।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আবারও কলকাতা হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়লেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক। একই সঙ্গে নিজের অবস্থান জানানোর জন্য তাঁকে চতুর্থ বার সময় দেওয়া হল। যদি আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মুখ্যসচিব পদক্ষেপ না করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হবে বলেও মঙ্গলবার জানায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

মঙ্গলবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য-সহ শিক্ষা দফতরের কয়েক জন প্রাক্তন আধিকারিকের জামিনের মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে। সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, রাজ্যের মুখ্যসচিবের অনুমতি না পাওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। কেন তিনি অনুমতি দিচ্ছেন না, মুখ্যসচিবের কাছে তার ব্যাখ্যা তলব করেছিল রাজ্যের উচ্চ আদালত। মঙ্গলবার রাজ্যের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, লোকসভা ভোটের কাজে ব্যস্ত মুখ্যসচিব। তাই তিনি জবাব দিতে পারেননি।

রাজ্যের যুক্তি শুনে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি বাগচী। তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়া মসৃণ ভাবে চলছে কি না, সেটা দেখা আদালতের কাজ। যদি দেখা যায় সেখানে কোনও বাধা আসছে, তবে তা সরানোর কাজ করতে হবে।’’

উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাত থেকে জামিন চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরা। ওই জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই জানায়, রাজ্যের মুখ্যসচিবের অনুমতি দেননি, তাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। তারা বার বার রাজ্যের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি। ১০ মাস ধরে ওই আবেদন পড়ে রয়েছে। তার পরই বিষয়টি নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সিবিআই। গত মাসে প্রথম বার আদালত মুখ্যসচিবকে নিজের অবস্থান জানাতে নির্দেশ দেয়। অভিযোগ, এত দিনেও ওই নির্দেশ কার্যকর করতে পারেননি মুখ্যসচিব।

মঙ্গলবারের শুনানিতে বিচারপতি বাগচীর পর্যবেক্ষণ, ‘‘নির্বাচনের সঙ্গে মুখ্যসচিবের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনও সম্পর্ক নেই। অযথা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তিনি দেরি করছেন। তিনি এই মামলার গুরুত্ব বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। মুখ্যসচিব নিজের বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।’’ পাশাপাশি আদালতের মন্তব্য, ‘‘আমাদের কি এটা ধরে নিতে হবে যে এই অভিযুক্তরা এতই প্রভাবশালী যে, রাজ্যের মুখ্যসচিবও বিচার শুরু করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না? এই দুর্নীতির শিকড় অনেক গভীরে রয়েছে এবং অনেক উচ্চপদস্থ কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এটা মাথায় রাখতে হবে মুখ্যসচিবকে। তাই বিচারের কাজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যসচিবকে প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে।’’

মঙ্গলবার আদালত মুখ্যসচিবকে চতুর্থ বারের জন্য সময় দেয় আদালত। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আগামী ২ মে-র মধ্যে তাঁকে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি নিয়ে অবস্থান জানাতে হবে। শেষ বারের মতো মুখ্যসচিবকে অবস্থান জানাতে বলা হচ্ছে। আদালত আরও জানায়, এ বারেও যদি বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি মুখ্যসচিব না দেন, তবে আদালতই সেই কাজ করতে বাধ্য হবে। এমনকি, ওই মর্মে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করবে আদালত।

আরও পড়ুন
Advertisement