রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের (বাঁ দিকে) সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের মামলায় হাই কোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। এ ক্ষেত্রে, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সিদ্ধান্তেই সায় দিয়েছে উচ্চ আদালত। বুধবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত বৈধ। তিনি যে অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন, তাঁদের বেতন এবং অন্যান্য সুযোগসুবিধা দিতে হবে রাজ্যকে।
গত ৫ জুন রাজ্যপালের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। মামলা দায়ের করেন এক অধ্যাপক। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। শুনানি শেষে বুধবার এই রায় দিয়েছে আদালত।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়, সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়, বাবাসাহেব অম্বেডকর এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয়, ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় এবং দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়— এই ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। কিন্তু রাজ্যপালের এই নিয়োগে সায় ছিল না রাজ্যের। শিক্ষা দফতরের তরফে দাবি করা হয়, রাজ্যপাল রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ না করেই উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন। ‘একতরফা’ নিয়োগের অভিযোগ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
তিনি ঘোষণা করেছিলেন, শিক্ষা দফতর এই উপাচার্যদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না। তিনি ওই ১১ জনের কাছে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে ‘সসম্মান অনুরোধ’ জানিয়েছিলেন যে, তাঁরা যেন পদ প্রত্যাহার করেন। যদিও তাঁর অনুরোধ কার্যত বিফলে যায়। ১১ জনের মধ্যে ১০ জনই আচার্যের দেওয়া পদ গ্রহণ করেছিলেন। এক জন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নিয়োগ গ্রহণ করেননি।
রাজ্যের তরফে বলা হয়েছিল, যে হেতু রাজ্যপাল নিযুক্ত অস্থায়ী উপাচার্যদের তারা স্বীকৃতি দিচ্ছে না, তাই তাঁরা বেতনও পাবেন না। এর পর জনস্বার্থ মামলা হয় হাই কোর্টে। বুধবার সেই মামলায় আচার্য রাজ্যপালের পক্ষে রায় দিল হাই কোর্টে।
ঘটনাচক্রে, বুধবারই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যের ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রাজ্যপালের। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা রাজ্যপালের কনভয়ের সামনে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তোলেন।