কুন্তলের চিঠি নিয়ে মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী শুক্রবার। ফাইল চিত্র।
কুন্তল ঘোষের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ মামলায় তদন্তে সহযোগিতা করা উচিত তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের। সোমবার এমনই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশের পর নিয়োগ দুর্নীতির এই মামলাটি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে এসেছে। সোমবার এই মামলার শুনানিতে অভিষেকের আইনজীবী বক্তব্য জানানোর জন্য আদালতের কাছে সময় চান। উচ্চ আদালতের তরফে সময় মঞ্জুর করা হলেও চলতি তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলা হয়। এর পাশাপাশি সোমবার অভিষেককে মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে শুক্রবার।
সোমবার আদালতে অভিষেকের আইনজীবী জানান, মামলাটির শুনানি ছিল বলে তাঁর জানা ছিল না। তাই নিজের বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেওয়া হোক। বিচারপতি অমৃতা সিংহ অভিষেকের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, “কেন জানেন না? মামলায় যুক্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন?” এই প্রসঙ্গেই বিচারপতির সংযোজন, “তদন্তের উপরে কেউ নন। আপনি তদন্তে সহযোগিতা করুন। তাতে অসুবিধার কী রয়েছে?” অভিষেকের আইনজীবী বলেন, “এই মামলায় আমার বক্তব্য না শুনেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কী ভাবে তদন্তে নাম জড়িয়ে পড়ল তাই বুঝলাম না? আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ তাই-ই পরিষ্কার নয়।” প্রত্যুত্তরে বিচারপতি বলেন, “আমি তো এখনই বলছি না আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক। কিন্তু তদন্তে আপনার সহযোগিতা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তা ছাড়া আপনি জড়িত কিনা, তা তদন্তকারী সংস্থাটির উপর ছেড়ে দিন। বিচারপতি এ-ও বলেন যে, “আইনই সবার উপরে। আইনই সর্বোচ্চ। তদন্তে সহযোগিতা করা প্রত্যেকের দায়িত্ব। এতে অসুবিধার কী রয়েছে?” এই প্রসঙ্গে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতে বলেন, “এ নিয়ে রাজ্যের কোনও বক্তব্য নেই। এটি একটি ব্যক্তিগত মামলা।”
অভিষেকের আইনজীবী সর্বোচ্চ আদালতের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “আমরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলাম। সেখানে কিছু নির্দেশ দিয়েছে। শীর্ষ আদালত অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দিয়েছিল।” বিচারপতি সিংহ বলেন, “একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে কিছু বলা হয়েছিল। তাই মামলা সরিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলার বিষয় নিয়ে শীর্ষ আদালতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশ নেই। অভিষেকের আইনজীবী আদালতের কাছে সময় চান। বলেন, “আমার বক্তব্য শোনার সুযোগ দেওয়া হোক। অন্তত এক দিন সময় দেওয়া হোক।” আদালত তাঁর সেই আবেদন মেনে নিয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি সিংহ বলেন, “তদন্তে সহযোগিতা করা উচিত। আপনাকে সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু পরে অন্য কথা বলবেন না। সব কিছু রেকর্ড করা হচ্ছে।”