স্যালাইন-কাণ্ডে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি দিলেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
স্যালাইন-কাণ্ডের জল এ বার গড়াল হাই কোর্ট পর্যন্ত। এই নিয়ে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার আবেদন গেল কলকাতা হাই কোর্টে। তার মধ্যে একটি জনস্বার্থ মামলা করতে চেয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। দ্বিতীয়টির জন্য আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। দু’টি জনস্বার্থ মামলাই দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এডুলজির মামলাটি আগামী বৃহস্পতিবার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
এডুলজি সোমবার হাই কোর্টে জানান, এ রাজ্যের এক সংস্থার খারাপ মানের স্যালাইন ব্যবহার করে কর্নাটকে কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছিল। তখন রাজ্যের ওই সংস্থাকে কালো তালিকায় পাঠিয়ে দেয় কর্নাটক সরকার। ওই সংস্থার থেকে বরাত নেওয়াও বন্ধ রাখা হয়েছে। সম্প্রতি এ রাজ্যেও খারাপ স্যালাইন ব্যবহারের পর মৃত্যুর অভিযোগ উঠে এসেছে। এমন অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের আর্জি জানান তিনি। প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম বলেন, “সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি দেখেছি। রাজ্য সরকার সম্ভবত কোনও পদক্ষেপও করছে।”
সম্প্রতি একই দিনে সিজ়ার হওয়া পাঁচ প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। তাঁদেরই এক জন মামনি রুইদাসের (২২) মৃত্যু হয় শুক্রবার সকালে। অপর এক জনের অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁকে জেনারেল শয্যায় পাঠানো হয়েছে। বাকি তিন জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। রবিবার রাতে গ্রিন করিডর করে ওই তিন প্রসূতিকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকে নিয়ে আসা হয়েছে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা।
এই ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের স্যালাইন (রিঙ্গার্স ল্যাকটেট) নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বস্তুত ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় গত ১০ ডিসেম্বর ওই স্যালাইনের উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমও মেনেছেন, গত নভেম্বরে স্যালাইন উৎপাদক ওই সংস্থাটিকে কর্নাটক সরকার কালো তালিকাভুক্ত করার পরে রাজ্যও ওই নির্দেশ দেয়। তবে এডুলজির দাবি, আরজি কর হাসপাতালে চলতি মাসেও স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছে। এই অবস্থায় স্যালাইন-বিতর্কের জল কোন দিকে গড়ায়, সে দিকে নজর থাকবে।
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডেও এক জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। আরজি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোট চারটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। তার মধ্যে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন বিজয় সিংহ নামে এক আইনজীবী। তাঁর হয়ে মামলা লড়েন আইনজীবী এডুলজি।